নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্ব। পাশের গলিতেই খাবারের দোকান। একই পরিবারের দুই তুতো বোন গিয়েছিল সেই খাবারের দোকানে। কিন্তু, তারা আর বাড়ি ফেরেনি। রাতে উত্তর কলকাতার গোয়াবাগান এলাকা থেকে আচমকা উধাও একই পরিবারের দুই নাবালিকা। আশপাশে তন্নতন্ন করে খুঁজেও তাদের হদিশ পাননি অভিভাবকরা। খাবার কিনতে গিয়ে দুই কিশোরীর অন্তর্ধানে রহস্য দানা বেঁধেছে। অপহরণের দাবি তুলেছে পরিবার। তার ভিত্তিতে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে বড়তলা থানার পুলিস।
বিধান সরণি সংলগ্ন সাহিত্য পরিষদ স্ট্রিটের বাসিন্দা ওই দুই নাবালিকা। দু’জনেরই বয়স ১৪ বছর। গড়নও প্রায় একই। তারা একটি বেসরকারি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার রাতে। গোয়াবাগান এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, দুই বোনের মধ্যে খুব মিলমিশ রয়েছে। বেশিরভাগ সময় তারা একসঙ্গে যাতায়াত করত। ওইদিন রাতে পাড়ার কয়েকজন তাদের একসঙ্গে বাড়ি থেকে বেরতে দেখেছে। বাড়ির পাশেই অবিনাশ ঘোষ লেন। সেখানেই খাবারের দোকানে যাওয়ার কথা ছিল। প্রায় ঘণ্টাখানেক কেটে গেলেও মেয়েরা বাড়ি না ফেরায় ওই খাবারের দোকানে যান অভিভাবকরা। কিন্তু, তারা জানায়, দু’জনের কেউই বুধবার রাতে ওই দোকানে আসেনি। এরপর আত্মীয়, কিশোরীদের বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু, কোথাও হদিশ মেলেনি দুই বোনের। দুই কিশোরীর বাবা শেষমেশ বড়তলা থানার দ্বারস্থ হন। লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা।
ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করছেন তদন্তকারীরা। সবকটি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরিবারের সদস্যদের দাবি, কেউ বা কারা দুই নাবালিকাকে অপহরণ করেছে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত সেই দাবি মানতে নারাজ পুলিস। সূত্রের খবর, ঘটনাস্থল থেকে অপহরণ সংক্রান্ত কোনও প্রমাণ হাতে আসেনি। পাওয়া যায়নি কোনও সন্দেহজনক গাড়ি বা ব্যক্তির আনাগোনা।
তাহলে কোথায় গায়েব হয়ে গেল দুই বোন? তাদের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে অন্তর্ধান রহস্যের কিনারা করতে চাইছেন তদন্তকারীরা। বাড়ি থেকে বেরনোর আগে তাদের কাছে ফোন বা মেসেজ এসেছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখছে বড়তলা থানার পুলিস। লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগকে উত্তর কলকাতার এই অন্তর্ধান রহস্যের গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছে। গোয়েন্দা বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত দুই বোনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তদন্ত চলছে। কিশোরীদের নিরাপত্তার স্বার্থেই এ নিয়ে বেশি তথ্য জানাতে চায়নি পুলিস।