• ঈদের বাজারে জমজমাট জাকারিয়া স্ট্রিট
    বর্তমান | ২৮ মার্চ ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বড়দিন মানেই বাঙালির গন্তব্য পার্ক স্ট্রিট। আর পুজো মানেই উত্তর আর দক্ষিণ কলকাতার টক্কর। গত কয়েক বছর হল, উৎসব পালনে পিছিয়ে নেই ঈদ। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালির কাছে এখন ঈদের ডেস্টিনেশন মধ্য কলকাতার জাকারিয়া স্ট্রিট। হরেক রকমের কাবাব, হালিম, নিহারি আর শেষ পাতে মহব্বত কা শরবত্। ভিড়ে ঠাসা জাকারিয়াতে লাইন দিয়ে খাওয়া-দাওয়াতেও শহরবাসীর উৎসাহে কোনও খামতি নেই। তরুণ-তরুণীদের বক্তব্য, ‘সুস্বাদু খাওয়ার ক্ষেত্রে স্থানমাহাত্ম্য জরুরি। এখানকার অসাধারণ খাবার মুখে দিতেই হবে।’

    জাকারিয়া মানে বাহারি নকশার নাখোদা মসজিদ। তেল ভর্তি চাটু থেকে পরোটা তোলার ছবি। ফেজ টুপির হরেক রং। আর সর্বদা নাকে কাবাবের মনকাড়া সুগন্ধ। এই রাস্তার ফাঁকে ফাঁকে নাম লুকিয়ে গুজরাতের এক জনগোষ্ঠীর-‘কাচ্চি মেমন’। প্রায় ২০০ বছর আগে ২৫০টির মতো পরিবার এসেছিলেন কলকাতায়। তাঁরা মূলত বন্দরে কাজ করতেন। ভারতের স্বাধীনতার পর তাঁদের অনেকে কলকাতা ছেড়ে চলে যান। সেই কাচ্চি মেমন গোষ্ঠীরই একজন নাসের ইব্রাহিম। তিনি বলেন, ‘এখন এখানে ৭০ থেকে ৮০টি পরিবার রয়েছে। হাজি জাকারিয়া একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। তাঁর নামেই এই রাস্তা। সেই থেকেই রাস্তার নাম জাকারিয়া স্ট্রিট।’ নাসেররাও জাকারিয়াতে এত ভিড় এর আগে কখনও দেখেননি। তিনি বললেন, ‘গত পাঁচসাত বছর হল এখানে এত ভিড় হচ্ছে। আগে তো লোকে শুধু বাজার করতে আসতেন। তারপর একটু খাওয়া-দাওয়া করতেন। এখন রমজান মাসজুড়ে সব ধর্মের মানুষই আসেন।’ গত কয়েক বছর ধরে জাকারিয়াতে নতুন নতুন খাবারেরও দেখা মিলছে। নাসের জানান, গত বছর থেকে বিরাট বিরাট পরোটা তৈরি হচ্ছে। এগুলি আগে দেখা যেত না। এমনিতে পরোটা-হালুয়া খাওয়ার চল রয়েছে। কিন্তু এত বড় পরোটা দেখা যায়নি। আর জাকারিয়ার আদি লোকজন বলেন, এখানে এলে হালিম আর নিহারি অবশ্যই খেয়ে যাবেন। আবার আরব দেশের মতো সেজে থাকা ‘মহব্বত কা শরবত্’। সে শরবৎ একেবারে চেটেপুটে খাচ্ছেও বটে সবাই। বারাকপুর থেকে জাকারিয়াতে এসেছিলেন সায়ন মিত্র। বললেন, ‘এটাও এখন পুজো-বড়দিনের মতো ট্রেন্ড হয়ে গিয়েছে। এখানে এসে একটা ছবি তুলে কিছু খেতেই হবে।’   
  • Link to this news (বর্তমান)