এই সময়: দেখে মনে হতে পারে কোনও ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইট। এমনকী, পাসওয়ার্ড ও লগইন আইডি দিয়ে নেট ব্যাঙ্কিং করলে, অ্যাকাউন্টে কত টাকা ডিপোজিট রয়েছে, তা দেখারও ফাঁদ পেতে রেখেছিল সাইবার অপরাধীরা। এমনই উন্নতমানের প্রযুক্তির সাহায্যে ব্যাঙ্কের নানা স্কিমে ইনভেস্টমেন্টের নাম করে এ দেশের বিভিন্ন ব্যক্তিকে ফাঁদে ফেলছিল তারা। সেই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত এক নাইজেরিয়ানকে মুম্বই থেকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশ। সাইবার ক্রাইমের ওই মামলায় আসামীর ৮ বছরের কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করল ব্যাঙ্কশাল আদালত।
পুলিশ সূত্রে খবর, করোনার সময়ে ২০২১ সালে কলকাতার বাসিন্দা শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায় নাইজেরিয়ান নাগরিক জেফারসন ইজি হেনরির ফাঁদে পড়েন। ই–মেল মারফত ওই ব্যক্তি শৈবালের সঙ্গে যোগাযোগ করে ‘রয়্যাল ব্যাঙ্ক অফ লন্ডন’–এর নানা স্কিমের বিষয়ে প্রলোভন দেখান। অভিযোগকারী ওই ব্যক্তি এয়ারপোর্ট অথরিটির প্রাক্তন অফিসার ছিলেন। প্রাথমিক ভাবে ওয়েবসাইটের লিঙ্ক থেকে ওই স্কিমগুলির বিষয়ে খোঁজখবরও নিয়েছিলেন তিনি। এমনকী, প্রথমে কিছু টাকাও ডিপোজিটও করেন।
পরে লগইন এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে নেট ব্যাঙ্কিং–এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট খুলে দেখেন, কত টাকা ডিপোজিট হয়েছে। তাঁর দাবি, ওই ওয়েবসাইটি ছিল যে কোনও কর্পোরেট ব্যাঙ্কের মতোই। দেখে বোঝার উপায় ছিল না, ওয়েবসাইটটি ভুয়ো। যদিও তার আগেই ধাপে ধাপে প্রায় ১ কোটি টাকা বিভিন্ন স্কিমে ডিপোজিট করে ফেলেছিলেন তিনি। এমনকী, ফিক্সড ডিপোজিটও করেছিলেন।
অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামে কলকাতা পুুলিশ। ২০২২ সালে অভিযুক্তকে মুম্বই থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেই মামলার ট্রায়াল চলছিল ব্যাঙ্কশাল কোর্টে। এদিন সেই মামলার সাজা ঘোষণা হয়। ওই মামলার বিশেষ সরকারি কৌসুলি অনির্বাণ গুহঠাকুরতা বলেন, ‘মানুষ সর্বশান্ত হচ্ছেন এই ধরনের সাইবার প্রতারকের ফাঁদে পড়ে। এদিন অভিযুক্তের সর্বোচ্চ ৮ বছরের সাজা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। না হলে টাকা গায়েব হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’