তৃণমূলের শিক্ষক নেতা শেখ সিরাজুল ইসলামকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ আপাতত প্রত্যাহার করল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ। আগে তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা নির্দেশ দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ। শুক্রবার তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার বদলে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দেয় বিচারপতি মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের পর্যবেক্ষণ, মামলা এখনও হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর সিঙ্গল বেঞ্চে বিচারাধীন। তাই আগের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে ডিভিশন বেঞ্চ। সিরাজুলকে বরখাস্ত করা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সিঙ্গল বেঞ্চই।
উল্লেখ্য, সিরাজুল ইসলাম হাওড়ার শিবপুরের একটি স্কুলের জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষক। বাম জমানাতে এই শিক্ষকের নিয়োগ হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে চাকরি পাওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলাও হয়। বাম জমানাতেই তাঁকে আদালত চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু অভিযোগ ওঠে, তিনি তার পরেও চাকরি করে যাচ্ছেন। তৃণমূল জমানায় তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপত্তি বেড়েছে বলে দাবিও করেন অনেকেই। সম্প্রতি হাওড়া জেলায় তৃণমূলের মাধ্যমিক শিক্ষা সেলের সাধারণ সম্পাদক পদের দায়িত্বও দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।
এই প্রেক্ষাপটে ফের একবার হাইকোর্টে সিরাজুলের বিরুদ্ধে মামলা হয়। কয়েকদিন আগে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এফআইআর-এর কোনও প্রভাব যাতে তাঁর চাকরিতে না পড়ে সেই জন্য সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সিরাজুল। ডিভিশন বেঞ্চ উল্টে সে দিনই (গত বুধবার) এই শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেয়।।
সেই শুনানিতে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার পর্যবেক্ষণ ছিল, সিরাজুলকে কোনও ভাবেই চাকরিতে বহাল রাখা যায় না। তাঁর নিয়োগ বেআইনি বলে ঘোষণা করে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশও দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি তাঁর বরখাস্ত হওয়ার পর শূন্যপদে নতুন করে নিয়োগের নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশনকে।
কিন্তু যে হেতু মামলা সিঙ্গল বেঞ্চে বিচারাধীন সেই জন্য সিরাজুলকে চাকরি থেকে বরখাস্তের নির্দেশ প্রত্যাহার করল ডিভিশন বেঞ্চ।