মহিষাদলে ‘অম্রুত জল প্রকল্প’-এর উদ্বোধন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রকল্পের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক ‘ঘনিষ্ঠ’-এর বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন তমলুকের চেয়ারম্যান। এই ঘটনায় স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
মহিষাদলের বাড় অমৃতবেড়িয়ায় এই জল প্রকল্পের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ১৮ দিন ধরে ওই এলাকায় অম্রুত প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারছে না ঠিকাদার সংস্থা, অভিযোগ এমনটাই। শুক্রবার এই সমস্যা আরও বাড়ে। ঠিকাদার সংস্থার কর্মকর্তারা সমস্যার কথা জানাতে তমলুক পুরসভার চেয়ারম্যান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়ের কাছে যান। তাঁদের অভিযোগ ছিল স্থানীয় তৃণমূল কর্মী কার্তিক তুঙ্গের বিরুদ্ধে। ঠিকাদার সংস্থার অভিযোগ, তাদের কাজে বাধা দিচ্ছেন দু’তিন জন। সমস্যা মেটানো না হলে ওই এলাকায় রূপনারায়ণ থেকে জল তোলার ইনটেক পয়েন্টের কাজ শুরু করা সম্ভব নয় বলেও সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়।
পুরসভার চেয়ারম্যান অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সৌভিক চট্টোপাধ্যায়কে ফোন করে অভিযোগটি জানান। অতিরিক্ত জেলাশাসকের নির্দেশে বিকেলেই পুরসভার তরফে মহিষাদল থানায় কার্তিক তুঙ্গের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়।
এ দিকে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন, কার্তিক মহিষাদলের বিধায়ক তিলক চক্রবর্তীর ঘনিষ্ঠ। তা নিয়ে কোনও মন্তব্য না করলেও জল প্রকল্পের কাজ নিয়ে তিলকবাবু বলেন, ‘ওয়ার্ক অর্ডারে নন্দকুমারের ইছাপুরে কাজ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার সংস্থা সেই কাগজ নিয়ে মহিষাদলের বাড় অমৃতবেড়িয়ায় কাজ করতে চায়। এই এলাকা ভাঙন অধ্যুষিত। আমি স্থানীয় বিধায়ক। আমার সঙ্গে আলোচনা না করেই কাজ শুরু হচ্ছিল।’
তমলুক শহরে ঘরে ঘরে অম্রুত প্রকল্পের পানীয় জল সরবরাহ করা হবে। সে জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১০৭ কোটি টাকা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রকল্পে শিলান্যাস করেন। প্রথমে ঠিক করা হয় নন্দকুমারের ইছাপুরে রূপনারায়ণ থেকে জল তোলা হবে। যদিও পরে মহিষাদল ব্লকের অমৃতবেড়িয়ার কাছে জল তোলার পরিকল্পনা হয়। সে জন্য অনুমতি দিয়েছে আন্তঃদেশীয় জলপথ বিভাগও।
ওই এলাকা থেকে জল তুলে তমলুক শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে দক্ষিণচড়ার শঙ্কর আড়ায় ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান থেকে জল পরিস্রুত করে পাইপলাইনের মাধ্যমে শহরের নানা প্রান্তে ওভারহেড রিজার্ভারে যাবে, জানা গিয়েছে এমনটাই। ওয়ার্ক অর্ডার পাওয়ার পরেই ঠিকাদার সংস্থা মহিষাদলের বাড় অমৃতবেড়িয়ায় পৌঁছয়। অভিযোগ, দু'তিনজন তাদের কাজে বাধা দেয় এবং মারধরের হুমকিও দেয়।
তমলুক পুরসভার চেয়ারম্যান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় বলেন, ‘আগে ইনটেক পয়েন্ট হিসেবে নন্দকুমার ব্লকের ইছাপুরের নাম ছিল। কিন্তু তা বদলে মহিষাদলের বাড় অমৃতবেড়িয়া হয়েছে। ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ এনওসি-ও দিয়েছে। টেন্ডারে ইছাপুরের নাম ছিল।’