সুপ্রকাশ চক্রবর্তী, হাওড়া
হাওড়া স্টেশন থেকে ফোরশোর রোড ধরে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর দিকে গেলে চোখে পড়বে সবুজ সাথী থেকে স্বাস্থ্যসাথী–সহ নানা জনমুখী প্রকল্পের তথ্যসমৃদ্ধ বোর্ড। এই সব বোর্ড দিয়েই ফোরশোর রোডের ধারে জমে থাকা আবর্জনা সরিয়ে কয়েক বছর আগে হাওড়া পুরসভা তৈরি করে শ্রীপর্ণা পার্ক।
এ বার হাওড়া পৌরসভার উদ্যোগে পার্কের বর্ধিত অংশ সাজানো হচ্ছে ‘ফেস্টিভ্যালস অফ ইন্ডিয়া’ থিমে। সেখানে ফুটে উঠবে দেশের বিভিন্ন রাজ্যের নানা উৎসবের ছবি। নতুন এই থিম পার্ক সাজানোর কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করেছে হাওড়া পুরসভা।
এক সময়ে ফোরশোর রোডের ধার ঘেঁষে চলত মার্টিন রেল। গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তার পাশে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে হাওড়া পৌরসভার উদ্যোগে তৈরি করা হয় এই শ্রীপূর্ণা পার্ক। ৩২৬ মিটার দীর্ঘ পার্কটিকে রাজ্য সরকারের জনমুখী প্রকল্পের তথ্য দিয়ে সাজানো হয়েছিল। আম জনতাকে সচেতন করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।
এই পার্ক মুখ্যমন্ত্রীরও নজর কাড়ে। চলতি বছরের শুরুতেই এই শ্রীপূর্ণা পার্কের পাশের কিছুটা অংশকে সাজিয়ে তোলা হয় হাওড়া জেলার হেরিটেজ স্থানগুলির ছবি দিয়ে। সেখানে স্থান পায় হাওড়া ব্রিজ, বেলুড় মঠ, হাওড়া স্টেশন, বটানিক গার্ডেন, আন্দুল রাজবাড়ির মতো হাওড়া দ্রষ্টব্য স্থানগুলি। পোশাকি নাম রাখা হয় ‘হেরিটেজ অফ হাওড়া’, যা সাধারণ মানুষের নজর কাড়ে।
হাওড়া শহরে যেহেতু বিভিন্ন ধর্ম ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ পাশাপাশি একসঙ্গে থাকেন, সেই কথা মাথায় রেখেই বিভিন্ন উৎসবের ছবি দিয়ে নতুন করে শ্রীপর্ণা পার্কের পরবর্তী অংশ সাজানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন হাওড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘গোটা দেশের গুরুত্বপূর্ণ উৎসবগুলোকে একইসঙ্গে তুলে ধরা হচ্ছে পার্কের নতুন সম্প্রসারিত ২০০ মিটার অংশে।’
দুর্গাপুজো, রথ যাত্রা, রামনবমী, গণেশ চতুর্থী, ছট পুজো, পোঙ্গল–সহ ২৪টি গুরুত্বপূর্ণ উৎসবের ছবি দিয়ে সাজছে পার্ক। এই কাজে হাওড়া পৌরসভার খরচ হচ্ছে প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা। বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্য ফেস্টিভ্যালগুলোকে তুলে ধরা হচ্ছে।
হাওড়া পুরসভার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকার মানুষ। তাঁরা জানান, আগে জায়গাটি আবর্জনায় ভরে থাকত। এখন ফোরশোর রোডের ধারের পুরো অংশটাই যে ভাবে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে, তা একইসঙ্গে দৃষ্টিনন্দন এবং জ্ঞানমূলকও।
এলাকার মানুষও প্রতিদিন ভীড় করছেন এই পার্কে। স্থানীয় বাসিন্দা অশোক সাউ বলেন, ‘পার্ক তো অনেক জায়গাতেই আছে। কিন্তু এখানে পার্ক এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যে, মানুষ পার্কে বেড়াতে এসে দেশ ও রাজ্য সম্পর্কে নানা জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন। এক কথায় একে জ্ঞান আহরণের পার্কও বলা যায়।’