টাকা চুরির অভিযোগে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রকে স্কুলের মধ্যে বিবস্ত্র করে মারধরের অভিযোগ,গ্রেপ্তার প্রধান শিক্ষক ...
আজকাল | ২৮ মার্চ ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: মুর্শিদাবাদের লালগোলা থানার এলাকায় একটি বেসরকারি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রকে স্কুলের মধ্যে বিবস্ত্র করে মারধর করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হলেন ওই স্কুলেরই প্রধান শিক্ষক। এসডিপিও (ভগবানগোলা) উত্তম গড়াই বলেন,'আহত ওই ছাত্রের পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার তাকে আদালতে পেশ করা হচ্ছে।'
ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে ভগবানগোলা থানার কালিনগর এলাকার বাসিন্দা জনৈক ফিরোজ শেখ তার ছেলেকে লালগোলা-যশইতলা এলাকায় একটি বেসরকারি আবাসিক স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলেন। ২৪ মার্চ ওই বেসরকারি স্কুলের হোস্টেল থেকে এক শিক্ষকের টাকা চুরি যায়। অভিযোগ উঠেছে ওই শিক্ষকের টাকা ফিরোজের ছেলে চুরি করেছে এই সন্দেহে তাকে স্কুলের মধ্যে বিবস্ত্র করে ব্যাপক মারধর করেন প্রধান শিক্ষক হাকিম শেখ ওরফে রুবেল।
ফিরোজের অভিযোগ, 'এখানে পড়াশোনা ভাল হয় এই খবর পেয়ে আমার ছেলেকে গত বছর ডিসেম্বর মাসে ওই স্কুলের তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি করেছিলাম। আমার ছেলে ওই স্কুলে আবাসিক হিসেবে থেকে পড়াশোনা করত। ২৪ তারিখ দুপুর নাগাদ স্কুলের প্রধান শিক্ষক হাকিম শেখ আমাকে ফোন করে ডেকে পাঠান। স্কুলে গিয়ে আমি জানতে পারি এক শিক্ষকের টাকা আমার ছেলে চুরি করেছে এই সন্দেহে ওই প্রধান শিক্ষক আমার ছেলেকে বিবস্ত্র করে ব্যাপক মারধর করেছেন।'
ফিরোজ আরও দাবি করেন,' স্কুলে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও তার ছেলে যে টাকা চুরি করেছে তার কোনও প্রমাণ ওই শিক্ষক দিতে পারেননি বা আমার ছেলের ঘর থেকে বা তার কাছ থেকে কোনও টাকাও উদ্ধার হয়নি। সম্পূর্ণ সন্দেহের বশে ওই প্রধান শিক্ষক সিসিটিভি ক্যামেরার আওতার বাইরে থাকা একটি ঘরের কাছে নিয়ে গিয়ে আমার ছেলেকে বিবস্ত্র করেন এবং তাকে প্রচন্ড মারধর করেন।'
ওই ব্যক্তি আরও অভিযোগ করেন,' স্কুলে পৌঁছানোর আগে তার ছেলেকে ওই প্রধান শিক্ষক হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন কিছু জানালে তাকে আরও মারধর করা হবে। স্কুলে কিছুক্ষণ থাকার পর তিনি গোটা ঘটনাটি জানতে পারেন।মারধরের ঘটনায় ছেলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে গেলে সেইদিনই তিনি হোস্টেল থেকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর ছেলেটি আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কৃষ্ণপুর হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। সেই সময় প্রধান শিক্ষক এসে আমাকে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে গোটা বিষয়টি মীমাংসা করে নিতে বলেছিলেন।'
ফিরোজের দাবি, ' প্রধান শিক্ষকের কথায় আমি রাজি হইনি। বৃহস্পতিবার আমার ছেলে একটু সুস্থ অনুভব করতেই রাতে লালগোলা থানায় ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলাম।' তিনি আরও বলেন,' ছেলে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছে। সে আর ওই স্কুলে যেতে রাজি নয়।' গোটা বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে জেলা শিশু সুরক্ষা কমিটি হস্তক্ষেপ করেছে ।