১৯৮০ সালে শিল্পপতি ও প্রাক্তন বিধায়ক সর্দার ইন্দ্র সিংয়ের বাড়িতে আয়কর দপ্তরের তল্লাশি শোরগোল ফেলে দিয়েছিল গোটা দেশে। সেই ঘটনা নিয়েই তৈরি হয়েছিল অজয় দেবগণ অভিনীত ‘রেইড’ সিনেমা। তল্লাশির সময় ছাদের ‘ফলস সিলিং’ থেকে সারি সারি টাকার বান্ডিল উদ্ধার হওয়ার দৃশ্য সকলেরই দেখা। চিনার পার্কে অবৈধ কল সেন্টারের মালিক অবিনাশ জয়সওয়ালের বাড়িতেও প্রতিটি ঘরেও (এমনকী বাথরুমেও) ‘ফলস সিলিং’ সন্দেহ জাগিয়ে তুলেছিল বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকদের মনে। উদ্ধার হলো ৩ কোটি ২ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা।
২৬ মার্চ সল্টলেকের একটি অবৈধ কল সেন্টারে অভিযান চালায় বিধাননগর পুলিশের একটি টিম। সেখান থেকে মোট ৬০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়। সেদিনও ওই অবৈধ কল সেন্টারের মালিক অবিনাশ জয়সওয়ালের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় নগদ ৫ লক্ষ টাকা। তল্লাশির সময়ে বাড়ির ইন্টেরিয়র দেখে সন্দেহ হয় তদন্তকারীদের। অত্যাধুনিক দরজা, প্রতিটি ঘরের ফলস সিং চোখ এড়ায়নি তদন্তকারীদের। এর পরেই শুরু হয় জোর তল্লাশি শুরু।
বিধাননগরের ডিসি ডিডি সোনওয়ানে কুলদীপ সুরেশ জানান, ঘরের ভিতরে একটি দরজা দেখে সন্দেহ তৈরি হয়। ওই দরজার পিছনেই ছিল একটি গুপ্ত জায়গা। সেখানে তিনটি ট্রলিতে ভরে রাশি রাশি টাকা লুকিয়ে রাখা ছিল। দীর্ঘদিন ধরেই সল্টলেকে এই অবৈধ কল সেন্টার চালিয়ে আসছিলেন অবিনাশ। মূলত, এই কল সেন্টার থেকে আমেরিকান নাগরিকদের সঙ্গে প্রতারণা করা হত টেক সাপোর্টের নাম করে।
সেক্টর ফাইভে ‘ইমাজিন টেক পার্ক’ বলে একটি বিল্ডিংয়ে আন্তর্জাতিক অবৈধ ওই কল সেন্টারে এর আগেই হানা দিয়েছিল পুলিশের বিশেষ দল। সেখান থেকেই তিন জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নগদ প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা-সহ বেশ কিছু কম্পিউটার, মোবাইল ও টাকা গোনার মেশিন বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। গিফট কুপন এবং বিটকয়েন-এর মাধ্যমে চলত প্রতারণা। এই চক্রের সঙ্গে আরও বড় মাথা জড়িয়ে রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।