• মেদিনীপুরে বাড়ছে জন্ডিস আক্রান্তের সংখ্যা, জলে মিলল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া
    এই সময় | ২৯ মার্চ ২০২৫
  • গত কয়েকদিনের তুলনায় পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হলেও শুক্রবার নতুন করে আরও ৩ জন জন্ডিস (হেপাটাইটিস-এ) আক্রান্তের খোঁজ মিলল মেদিনীপুর শহরে। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর ও মেদিনীপুর পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন জনই মেদিনীপুর শহরের ২০নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা।

    বৃহস্পতিবার শহরের ২২নং ওয়ার্ডের সুকান্তপল্লী এলাকায় ২৪ জন জন্ডিস (হেপাটাইটিস-এ) আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। ওই এলাকার আরও ১৯ জনের শরীরে জন্ডিসের (চোখ হলুদ, বমি, পেটখারাপ) উপসর্গ পাওয়া গিয়েছে। ওই ১৯ জন-সহ মেদিনীপুর শহরের ২০, ২১ ও ২২নং ওয়ার্ডের মোট ১৫৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেদিনীপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান।

    এদিন বিকেলে এই সময় অনলাইন-কে তিনি এও জানান, ‘শুক্রবার নতুন করে ৩ জন জন্ডিস আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। তবে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। জন্ডিস আক্রান্ত এবং উপসর্গযুক্ত সকলেই ভালো আছেন। পুরসভা, স্বাস্থ্য দপ্তর ও প্রশাসনের তরফে সমস্ত ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।’ অপরদিকে, জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে শুক্রবার বিকেলে জানা গিয়েছে, ২০, ২১ ও ২২নং ওয়ার্ড থেকে যে জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল, তার মধ্যে ২১ ও ২২নং ওয়ার্ডের মোট ৯১টি পরিবারের জলের নমুনাতে পাওয়া গিয়েছে ক্ষতিকারক কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া।

    এর আগে শুক্রবার সকালে জন্ডিস উপদ্রুত ২২নং ওয়ার্ডের সুকান্তপল্লী এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের হাতে ওআরএস, হ্যালোজেন ট্যাবলেট প্রভৃতি তুলে দেন মেদিনীপুরের বিধায়ক সুজয় হাজরা। দুপুর নাগাদ সুডা (স্টেট আরবান ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি)-র ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল এলাকা পরিদর্শনে যান। প্রতিনিধিদলের এক সদস্য ডঃ প্রিয়াঙ্কা জানান, ‘যে সোর্স থেকে রোগ ছড়াচ্ছিল, তা চিহ্নিত করা গিয়েছে। পুরসভার তরফে ওই সাবমার্সিবল ইতিমধ্যেই সিল করে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। আক্রান্তরাও আগের তুলনায় ভালো আছেন।’ তাঁদের সঙ্গে ছিলেন মেদিনীপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান, ২২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মৌসুমী হাজরা প্রমুখ।

    শুক্রবার বিকেলে এই সময় অনলাইন-কে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক সৌম্যশঙ্কর ষড়ঙ্গী জানান, ‘বৃহস্পতিবার আমরা ২৪ জন হেপাটাইটিস-এ আক্রান্তের খোঁজ পেয়েছিলাম। ২০, ২১ ও ২২নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন বাড়িতে সমীক্ষা করে, আমরা যাঁদের নমুনা টেস্ট করতে পাঠিয়েছিলাম তাঁদের মধ্যে ৩ জনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে এদিন। অপরদিকে, ২২নং ওয়ার্ডের ওই 'হটস্পট' এলাকার (সুকান্তপল্লীর) ২১টি এবং পাশের এলাকার ৩৮টি পরিবারের জলের নমুনাতে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও, ২১নং ওয়ার্ডের ৩২টি পরিবারের জলের নমুনাতেও এই ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গিয়েছে। এই ব্যাকটেরিয়া থেকে ডায়রিয়া, আন্ত্রিক সহ পেটখারাপ হতে পারে।’

    তবে জলে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া এল কি করে? CMOH জানান, ‘কোনওভাবে ওই জলে মল, মূত্র, আবর্জনা; মানে বর্জ্য পদার্থ বা নোংরা-আবর্জনা মিশেছে।’ জানা গিয়েছে, ২২নং ওয়ার্ডের সুকান্তপল্লীতে অবস্থিত ওই সাবমার্সিবলের কাছেই নিকাশি নালা ও শৌচাগার আছে। মেদিনীপুরের বিধায়ক সুজয় হাজরা বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতির উপর নজর রেখেছি। এই ধরনের পরিস্থিতি যাতে শহরে আর না হয়, সেজন্য স্বাস্থ্য দপ্তর, পুরসভা ও প্রশাসন একযোগে কাজ করছে।’

  • Link to this news (এই সময়)