• বোলপুরে স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা যাবজ্জীবন সাজা স্বামীর
    বর্তমান | ২৯ মার্চ ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বোলপুর: নানুরে স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার অপরাধে স্বামীকে যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা শোনাল বোলপুর আদালত। এছাড়া ২০  হাজার টাকা জরিমানাও ধার্য করা হয়েছে। অনাদায়ে অতিরিক্ত ছ’ মাস সশ্রম কারাদণ্ড ঘোষণা করেন বিচারক উমেশ সিং। ২০১৭ সালে পুড়িয়ে মারার ঘটনাটি ঘটে। আট বছর মামলা চলার পর গত বৃহস্পতিবার মহিলার স্বামী গৌতম সাঁতরাকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল বোলপুর আদালত। এই ঘটনায় প্রাথমিকভাবে তিনজনকে গ্রেপ্তার করলেও গৌতমের দাদা ও বউদি প্রমাণাভাবে ছাড়া পান। আদালতের এই শাস্তি ঘোষণায় সন্তুষ্ট মৃত গৃহবধুর পরিবার। 

    আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালের ৪ মার্চ মহিলাকে পুড়িয়ে মারার ঘটনাটি ঘটে। আলু ভাগাভাগি নিয়ে ঝামেলার সূত্রপাত। ওইদিন নানুরের রানিবাজারের গৃহবধূ মানবী সাঁতরা (২৫) মাঠ থেকে আলু সংগ্রহ করে বাড়ি ফেরেন। কিন্তু তাঁর স্বামী গৌতম সাঁতরা সেগুলি কেড়ে নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করতে চাইলে দুজনের মধ্যে বচসা বাধে। এরপরেই ক্ষুব্ধ গৌতম, মানবীর গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। তাতে মানবীর গোটা শরীর আগুনে পুড়ে যায়। পুরো ঘটনায় গৌতমের দাদা উত্তম সাঁতরা ও তার বউ মালতি সাঁতরা প্ররোচনা দেয় বলে অভিযোগ। নানুর থানার পুলিস ঘটনার খবর পেয়ে অগ্নিদগ্ধ মানবীকে নিকটবর্তী মঙ্গলকোট হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু শারীরিক পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় মানবীকে  বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। এই ঘটনার পরপরই পুলিস স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা দায়ের করে। ৯ মার্চ মানবীর মৃত্যু হলে ওইদিন তিন অভিযুক্তকেই গ্রেপ্তার করে নানুর থানা। 

    মামলা ওঠে বোলপুর আদালতে। ‌আট বছর ধরে সেই মামলা চলে। কিছুদিন জেল খাটার পর তিন অভিযুক্তই জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন। মামলা চলাকালীন মোট ১২ জন সাক্ষ্য দেন। তারই ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার গৌতম সাঁতরাকে দোষী সাব্যস্ত করেন বোলপুর আদালতের বিচারক উমেশ সিং। তবে, গৌতমের দাদা উত্তম ও তার স্ত্রী মালতি বেকসুর খালাস হয়ে যায়। শুক্রবার আদালত গৌতমকে কী সাজা দেয় সেদিকেই তাকিয়েছিল মৃতার পরিবার। এদিন দুপুরে গৌতমের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনে সন্তোষ প্রকাশ করেন তাঁরা।  
  • Link to this news (বর্তমান)