নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: সাড়ে চার বছরের শিশুপুত্রকে শ্বাসরোধ করে খুনের দায়ে বাবাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনাল আদালত। শুক্রবার আরামবাগের অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিস্ট অ্যান্ড সেশন জাজ ফার্স্ট কোর্টের বিচারক কিষেনকুমার আগরওয়াল ওই সাজা শুনিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত মন্টু পালের বাড়ি গোঘাটের কুমারগঞ্জ পঞ্চায়েতের শালিকোনা গ্রামে। সেখানেই আটবছর আগে ছেলেকে নৃশংসভাবে খুন করেছিল সে।
সরকারি আইনজীবী বিকাশ রায় বলেন, স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িত সন্দেহ করে মন্টু ওই শিশুকে খুন করে। সেই ঘটনায় আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে। সেইসঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয়মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।আদালত সূত্রে খবর, ২০১৭ সালের ১৭মার্চ রাতের ঘটনা। মন্টু, তার স্ত্রী ও পুত্রসন্তান ঘরে ঘুমিয়েছিল। মাঝরাতে তার স্ত্রী রাখি পালের ঘুম ভাঙলে তিনি ঘরে ছেলে ও স্বামীকে দেখতে পাননি। দরজা বাইরে থেকে বন্ধ ছিল।
তিনি কোনওভাবে দরজা খুলে পাশের ঘরে গিয়ে দেখেন, ছেলে মেঝেতে পড়ে রয়েছে। কাছে তার স্বামী মন্টুও শুয়েছিল। ছেলের চোখেমুখে জল দিয়ে ডাকলেও সাড়া পাননি রেখাদেবী। শিশুটি মারা গিয়েছে বুঝতে পেরে মন্টু সেখান থেকে পালিয়ে যায়। ১৮মার্চ রাখিদেবী গোঘাট থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে ছেলেকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিস ওইদিনই মন্টুকে গ্রেপ্তার করে। সেসময় থেকেই সে জেল হেফাজতে ছিল।
আরামবাগ আদালতে মামলার বিচারপ্রক্রিয়া চলছিল। ওই বছর ৩০মে পুলিস আদালতে চার্জশিট পেশ করে। সেবছর ২১ডিসেম্বর চার্জ গঠন হয়। মামলায় ১১জনের সাক্ষ্য গ্রহণ হয়। সবদিক বিচার করে বৃহস্পতিবার মন্টুকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। এদিন সাজা ঘোষণা হয়েছে।
সরকারি আইনজীবী বলেন, পুত্রসন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে সন্দেহের বশে তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে আসামী। আদালত তার সাজা ঘোষণা করেছে। আসামীপক্ষের আইনজীবী সংগ্রাম সরকার বলেন, এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই। আমরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হব।