শিশু মৃত্যুর ঘটনায় নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটিতে বিক্ষোভ, উত্তেজনা
বর্তমান | ২৯ মার্চ ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: মেয়াদ উত্তীর্ণ ইঞ্জেকশনে ছ’মাসের শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে উত্তেজনা ছড়ায়। মৃতার নাম প্রীতি বিজলি। শুক্রবার সকাল ৮টা নাগাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই শিশুর মৃত্যু হয়। ঘটনায় দুপুর ১টা নাগাদ মৃত শিশুর পরিবারের লোকজন হাসপাতালে তুমুল বিক্ষোভ দেখান। খবর পেয়ে নন্দীগ্রাম থানার পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পুলিসকে ঘিরেও বিক্ষোভ চলে। হাসপাতাল চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। এনিয়ে মৃত শিশুর পরিবারের তরফে হাসপাতালের সুপার পবিত্রকুমার হালদারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
হাসপাতাল সুপার বলেন, শিশু মৃত্যুর ঘটনায় একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। যথাযথ তদন্ত করা হবে। তাতে কেউ দোষী প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হবে। তবে, শিশুকে দেওয়া ওষুধ এবং ইঞ্জেকশন মেয়াদ উত্তীর্ণ নয়।
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ নন্দীগ্রাম-১ব্লকের ভেকুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অনন্তপুর গ্রামের বাপনকুমার বিজলি তাঁর ছ’মাসের শিশুকন্যা প্রীতিকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করেন। সর্দি, কাশি এবং শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে ওই শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশুর মা রাসমণিদেবীর অভিযোগ, মেয়েকে হাসপাতালে দেরি করে ভর্তি করা হয়েছে বলে নার্স মুখ ঝামটা দেন। এক্স-রে করে দেখা যায়, শিশুর বুকে কফ জমেছে। তারপর স্যালাইন ও ইনহেলার দেওয়া হয়। ইনহেলার দেওয়ার পদ্ধতি নার্স দেখিয়ে দেননি বলে রাসমণিদেবীর অভিযোগ। শুক্রবার সকাল ৯টা নাগাদ হাসপাতালে ওই শিশুর মৃত্যু হয়। তারপরই বাড়ির লোকজন দুপুরে হাসপাতালে তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েন। খবর পেয়ে নন্দীগ্রাম থানা থেকে পুলিস যায়। বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় পুলিসকেও। হাসপাতাল সুপার নিরপেক্ষ তদন্ত করে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিতে বিক্ষোভ ওঠে।
পরিবারের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা পর্যন্ত ওই শিশু একপ্রকার বিনা চিকিৎসায় হাসপাতালে ছিল। চিকিৎসক রক্ত পরীক্ষার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট অনেক দেরিতে পাওয়া যায়। বাপনবাবু বলেন, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ মেয়েকে একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। সেই ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরই প্রীতির মৃত্যু হয়। ওই ইঞ্জেকশনের মেয়াদকাল নিয়ে আমাদের সংশয় রয়েছে। হাসপাতালের নার্সিংস্টাফ থেকে গার্ড কারও ব্যবহার ঠিকঠাক নয়। অসুস্থ অবস্থায় ভর্তির পর সময়মতো চিকিৎসাও শুরু হয়নি। আমরা এই ঘটনায় পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চাইছি। -নিজস্ব চিত্র