দুর্লভ যোগে আজ শনির দশা-মুক্তি, ৩০ বছর পর অবস্থান বদল, নববর্ষ পর্যন্ত সতর্ক থাকার পরামর্শ শাস্ত্রজ্ঞদের
বর্তমান | ২৯ মার্চ ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শনিবার। অমাবস্যা। সেই সঙ্গে ৩০ বছর পর শনি গ্রহের অবস্থান পরিবর্তন—এমনই মহাযোগ আজ। শাস্ত্রবিদরা বলছেন, দুর্লভ সংযোগ। একটু সচেতনভাবে জীবনযাপন করলে আগামী দিনে আসতে চলেছে শুভক্ষণ।
প্রবাদ রয়েছে, গ্রহের পরিবর্তন মানুষের জীবনযাত্রাকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। জন্মছক অনুযায়ী সেই প্রভাব নিয়ন্ত্রিত হয়। সেখানে ২০২৫ সালের ২৯ মার্চ, অর্থাৎ আজকের দিনটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। কারণ আজই শনি গ্রহ অবস্থানের পরিবর্তন ঘটাবে। অর্থাৎ, গমন করবে কুম্ভ রাশি থেকে মীন রাশিতে। এর আগে ১৯৯৫ সালে শনির অবস্থার পরিবর্তন হয়েছিল। তার আবার ৩০ বছর পর এই যোগ। ঘটনাচক্রে আজ এই অবস্থা পরিবর্তনের দিনই শনিবার এবং অমবস্যা তিথি। ফলে কালচক্রে মহাজাগতিক। তাই শাস্ত্রজ্ঞ থেকে জ্যোতিষীরা একবাক্যে বলছেন, খুব গুরুত্বপূর্ণ আজকের দিনটি। জ্যোতিষ শাস্ত্রবিদ ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘প্রত্যেক গ্রহের একটি স্বরূপ থাকে। তার প্রভাব পড়ে জগতের উপর। ফলে আজ রাশি বদলের মহাযোগের প্রভাবও পড়বে। তা কেমন হবে, এবং কীভাবে পড়বে, তা পুরোটাই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জন্মছকের উপর নির্ভরশীল। আশা করা যায়, বেশ কয়েকটি রাশির জাতকরা ভালো ফল পাবেন। কয়েকটি রাশির ক্ষেত্রে কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।’ তবে শনির সাড়েসাতির কথা ভেবে অনেকেই চিন্তিত। অনেকেই নানা ধরনের প্রভাবের আশঙ্কায় উদ্বেগে রয়েছেন। জ্যোতিষ শাস্ত্রবিদরা বলছেন, শনির অবস্থার পরিবর্তনের সঙ্গে মেষ রাশির সাড়েসাতি শুরু হবে এবং মকর রাশির সাড়েসাতি শেষ হবে। আগামী আড়াই বছর মীনেই অবস্থান করবে শনি।
যেহেতু অমাবস্যা তিথিতে পুণ্যযোগ হচ্ছে, তাই আজকের দিনে পুজোপাঠের পরামর্শ দিয়েছেন যুগলকিশোর শাস্ত্রী। তাঁর মতে, ‘গুরুত্বপূর্ণ দিন। বিশেষ করে দোষ নিবারণের জন্য পূজার্চনা, প্রদীপ জ্বালানো জরুরি। শনির দশা-মুক্তি হবে। শান্তি আসবে। জীবন ও ভাগ্য বদলে যাবে। সুখ, শান্তি আসতে শুরু করবে।’ অনেকে আবার আজকের দিনটিকে নিয়ে নানা কু-কথা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে আজই এবছরের প্রথম সূর্যগ্রহণ। তবে ভারতে তা দেখা যাবে না। কিন্তু সূর্যগ্রহণ, শনির অবস্থার পরিবর্তন, অমাবস্যা তিথি ও শনিবারকে এক সারিতে রেখে অনেকে নানা তত্ত্ব হাজির করেছেন। কিন্তু গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকার প্রধান রাজগণক অচিন্ত্য ভট্টাচার্যের কথায়, ‘খারাপ চিন্তা করার কোনও কারণ নেই। আশা করি বড় অঘটন ঘটবে না। নবববর্ষের পর থেকে ভালো হবে।’
তবে ভালো সময়, কর্মক্ষেত্রে উন্নতি এবং আর্থিক শ্রীবৃদ্ধির জন্য বেশ কিছু পরমার্শ জ্যোতিষ শাস্ত্রজ্ঞদের কথায় উঠে এসেছে। তাঁদের বক্তব্য, সংযত জীবনযাপন করতে হবে। উস্কানিমূলক বা বিভেদ ছড়ানোর মতো কোনও বিবৃতি দেওয়া, অসাধু কাজ এবং আবেগের বশে সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে দূরে থাকতে হবে। সত্যের পথে থেকে নিষ্ঠার সঙ্গে জীবনযাপন করলে মহাযোগে শুভ ফল আসবে।