সালোয়ার পরে স্কুলে যাওয়া নিয়ে ফতোয়ার শিকার , শিক্ষিকাকে পুনর্নিয়োগের নির্দেশ
বর্তমান | ২৯ মার্চ ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ১৫ বছর আগের ঘটনা। স্কুলে সালোয়ার কামিজ পরে আসায় রোষের মুখে পড়েছিলেন স্কুল শিক্ষিকা। এমনকী শিক্ষিকার ওই পোশাক নিয়ে ফতোয়াও জারি হয়। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে সেসময় জোর বিতর্কও হয়েছিল। অবশেষে হাইকোর্টে বিচার পেলেন সেই শিক্ষিকা।
২০১০ সালের ডিসেম্বর মাসের ঘটনা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশপুর প্রফুল্ল বালিকা বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষিকা মধুরিমা দাস সালোয়ার কামিজ পরে স্কুলে এসেছিলেন। দূর থেকে যাতায়াতের কারণে তিনি সালোয়ার কামিজ পরে স্কুলে আসার আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু ম্যানেজিং কমিটি শাড়ি পরে আসার ফতোয়ায় অনড় থাকে বলে অভিযোগ।
এরপর একদিন ছাত্রী ও অভিভাবকদের একাংশের উপস্থিতিতে কয়েকজন শিক্ষিকাই তাঁকে চূড়ান্তভাবে হেনস্তা করেন। ওই ঘটনার জেরে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই শিক্ষিকা। ঘটনার পর থেকে তাঁকে আর স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁর বেতন বন্ধ করে দেয়। প্রায় সাতবছর মানসিক চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি ‘ফিট’ সার্টিফিকেট পান। এরপর স্কুলে যোগদানের জন্য শিক্ষাদপ্তরের কাছে আবেদন জানান ওই শিক্ষিকা। কিন্তু অভিযোগ, তাতে কোনও সুরাহা হয়নি। অবশেষে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি।
এরপর পাঁচবছর হাইকোর্টের বিভিন্ন ঘর ঘুরে শেষে মামলা আসে বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায়রে এজলাসে। শুক্রবার মামলা চলাকালীন শিক্ষিকার পক্ষের আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরী জানান, কোন শিক্ষিকা কী ধরনের পোশাক পরবেন তা নিয়ে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি ফতোয়া জারি করতে পারে না। এখনও ওই শিক্ষিকাকে স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। অভিযোগ শুনেই বিচারপতি বিস্ময় প্রকাশসহ বলেন, বিষয়টির দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন। এরপরই দক্ষিণ ২৪ পরগনার স্কুল পরিদর্শককে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে ওই শিক্ষিকাকে পুনরায় নিয়োগের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি চট্টোপাধ্যায়।