• ইদে হাতে বোনা তাঁতের শাড়ির চাহিদা তুঙ্গে, সপ্তাহে প্রতিদিন খোলা হাট
    এই সময় | ২৯ মার্চ ২০২৫
  • সূর্যকান্ত কুমার, কালনা

    খুশির ইদের আবহে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে হস্তচালিত তাঁত। স্বপ্ন দেখছেন ধাত্রীগ্রাম, সমুদ্রগড়, নসরতপুরের তাঁতিরা। ইদের বাজারে তাঁতের শাড়ির বেচাকেনা যেমন জমে উঠেছে, তেমনই দরজায় কড়া নাড়ছেন বড় পাইকারি ব্যবসায়ীরা। অগ্রিম হাতে দিয়ে আরও বেশি শাড়ির অর্ডার দিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।

    একমুখ হাসি নিয়ে সমুদ্রগড়ের গণেশচন্দ্র কর্মকার বলে উঠছেন, ‘ইদের শেষ পর্যায়ের কেনাকাটায় হাতে বোনা তাঁতের শাড়ির খুব চাহিদা।’ তাঁত কাপড় হাটের কর্ণধার সুবীর কর্মকারের মন্তব্য, ‘আমাদের হাট সপ্তাহে দু’দিন করে হয়। কিন্তু বাজারে ভিড় দেখে ইদের আগে চলতি এই সপ্তাহে প্রতিদিন হাট খুলে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’

    পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রায় ৬৫ হাজার মানুষ তাঁতের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যুক্ত। কালনা মহকুমার সমুদ্রগড়, ধাত্রীগ্রাম, নসরতপুর, শ্রীরামপুরের বহু মানুষ হস্তচালিত তাঁতের কাজের সঙ্গে যুক্ত। ধাত্রীগ্রাম ও শ্রীরামপুরে সরকারি উদ্যোগে দু’টি তাঁত–হাট গড়ে ওঠার সঙ্গে সমুদ্রগড়ে রয়েছে একটি বড় তাঁত কাপড়ের হাট।

    তবে পাওয়ারলুমের কম দামী শাড়ির সঙ্গে পেরে না–ওঠায় ক্রমশ রুগ্ন হতে শুরু করেছিল তাঁত শিল্প। সেই ছবি বদলাচ্ছে। ক্রেতারা হস্তচালিত তাঁতের শাড়ির প্রতি ফের আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

    তাঁতি পিন্টু বসাকের কথায়, ‘ইদে এ বার বেচাকেনা বেশি। বাইরে থেকে প্রচুর খুচরো ক্রেতা আসছে।’ তাঁরা এ–ও জানাচ্ছেন, হস্তচালিত তাঁতের বাজার খারাপ হতেই পাইকারি ব্যবসায়ীদের সংখ্যা কমেছিল। আবার তাদের আনাগোনা বাড়ছে।

    নাদনঘাটের ধোবায় রয়েছে বর্ধমান হ্যান্ডলুম ডেভেলপার্স অ্যান্ড প্রোডিউসার্স কোম্পানি। তার চেয়ারম্যান রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী সুরেশ বসাক। তিনি বলছেন, ‘রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের তৎপরতা, বিপণন ও প্রচার সমেত নানা কারণে হস্তচালিত তাঁতের বাজার ফিরছে। ইদের বাজারে তার আভাস মিলেছে। মনে হচ্ছে, পুজোর বাজারেও তাঁতের কাপড়ের ভালো চাহিদা থাকবে।’

  • Link to this news (এই সময়)