অতীশ সেন, ডুয়ার্স: জলদাপাড়া পশ্চিম রেঞ্জের রেঞ্জারের নেতৃত্বে বনদপ্তরের আধিকারিক ও কর্মীরা অভিযানে নেমে আলিপুরদুয়ার থেকে বনরুই-এর আঁশ ও চামড়া সহ ভুটানের এক বাসিন্দাকে গ্রেপ্তার করল। ধৃত দেওবাহাদুর লিম্বু ওরফে গোবর্ধন লিম্বুর বাড়ি ভুটানের সামসী জেলার গোমটু ব্লকের কালাপানি বস্তিতে।
বনদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিগত কয়েক মাস ধরে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন এলাকার গ্রামগুলি থেকে বন্যপ্রাণ সম্পর্কিত বেআইনি লেনদেনের খবর মিলছিল। স্থানীয়দের কাজ থেকে জানা গিয়েছিল, ভুটান থেকে কিছু লোক প্রায়ই এই এলাকায় আসছে। এবং বন্যপ্রাণীর দেহাংশ নিয়ে তারা কারবার করছে। বিষয়টি নজরে আসার পর থেকেই জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের একটি বিশেষ দল এই এলাকায় কড়া নজরদারি চালাচ্ছিল। অবশেষে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযানে নেমে দেওবাহাদুর লিম্বুকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণ বনরুইয়ের আঁশ ও চামড়া উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, এই পাচারচক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বনরুই বা প্যাঙ্গোলিন হল এক ধরনের স্তন্যপায়ী প্রাণী। যার সারা দেহ বড় মাছের মতো আঁশ দিয়ে ঢাকা থাকে। নিরিহ এই জন্তুটি তার শরীরজুড়ে থাকা শক্ত আঁশের জন্য পরিচিত। এই আঁশই জন্তুটির আত্মরক্ষার প্রধান অস্ত্র। বনরুই সাধারণত পিঁপড়ে ও উঁইপোকা খেয়ে বেঁচে থাকে। এরা রাতের বেলায় সক্রিয় হয়। এই প্রাণীটির আঁশ ও দেহাংশের চাহিদা পরম্পরাগত ঔষুধ তৈরি ও চিকিৎসার কাজে চীন ও তিব্বতে রয়েছে বলে জানা যায়। এটি একটি সংরক্ষিত প্রাণী এবং এর শিকার সম্পূর্ণ বেআইনি। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, এই ধরনের অবৈধ কার্যকলাপ রুখতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি জঙ্গল সংলগ্ন এলাকায় সন্দেহজন লোকজনের আনাগোনা আটকাতে এলাকার বাসিন্দাদের সচেতন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।