• মূর্তির পাড়ে রিসর্টে জাপানি মিয়াজ়াকি, নজরদারি সিসিটিভি ক্যামেরায়
    এই সময় | ৩০ মার্চ ২০২৫
  • সব্যসাচী ঘোষ, মালবাজার

    ‘মিয়াজ়াকি আম যে খায়নি, সে জীবনের মধুরতম স্বাদের সন্ধান পায়নি’। এ ভাবেই বিজ্ঞাপন দিয়ে পৃথিবী জুড়ে মিয়াজ়াকি আম নিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছিল জাপান। হু হু করে বাড়তে শুরু করে এই প্রজাতির আমের চাহিদা। স্বাদের লড়াইয়ে আলফানসোকেও পিছিয়ে পড়তে হয় মিয়াজ়াকির সঙ্গে দৌড়ে। সেই আম এ বার সাড়া ফেলে দিয়েছে ডুয়ার্সেও।

    কোনও ভাবে ডুয়ার্সে চলে আসে বিখ্যাত মিয়াজ়াকির একটি চারা। মূর্তি নদী লাগোয়া একটি রিসর্টে থাকা সেই আম গাছটি শুধুমাত্র এলাকার নয়, পর্যটকদের কাছেও অন্যতম আকর্ষণ। ২০২০–তে কীভাবে এই চারা সেখা‍নে চলে আসে, তা আজও স্পষ্ট নয়।

    ২০২৩–এ প্রথম যখন সেই গাছে আম হয়, তখন রিসর্টে বেড়াতে এসেছিলেন পুনের কয়েকজন উদ্ভিদ বিজ্ঞানী। তাঁরা জানান, এটি সাধারণ আম গাছ নয়, আসলে জাপানি মিয়াজ়াকি। রিসর্টের কর্ণধার পাপিয়া মজুমদারের কথায়, ‘আমাদের প্রাণের চেয়েও প্রিয় এই মিয়াজ়াকি গাছ। এটি রিসর্টের অন্যতম অলংকারও। তাই গাছের বিষয়ে খুব সচেতন থাকি আমরা।’

    ফি বছর গরম পড়তেই এই গাছ দেখতে ভিড় উপচে পড়ে রিসর্টে। একবার গভীর রাতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে চুরি করে নেওয়া হয় গাছের লালচে বেগুনি আটটি আম। সেই থেকে প্রকাণ্ড একটি লোহার গারদের ঘেরাটোপে রয়েছে গাছটি। রিসর্টকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া রয়েছে, গাছের কাছে কেউ যেন বেশিক্ষণ না দাঁড়ান। আশেপাশে রয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরার নজর।

    শুধুমাত্র এই গাছের দেখভালের জন্য রয়েছেন অভিজ্ঞ মালি স্বপন মাইতি। লোহার গারদের চাবি তিনি কখনও কাছ ছাড়া করেন না। দিনে দু'বার গাছটির আলাদা করে পরিচর্যা করেন। কখনও মাটিতে জৈব সার, কখনও ওষুধ মিশ্রিত জল প্রয়োগ করতে হয় স্বপনকে। কাজের ফাঁকে তিনি বলেন, ‘এই আম গাছ সব জায়গায় পাবেন না। এমন সুস্বাদু মিষ্টি ফল একবার খেলে সারাজীবন তার স্বাদ মুখে লেগে থাকবে।’

    এ বছর গাছে ভালো মুকুল এসেছে বলে জানান রিসর্টের ম্যানেজার সত্যব্রত মাইতি। ছোট ছোট আমের গুটি ধরেছে। সত্যব্রত বলেন, ‘গত বছর সব মিলিয়ে কুড়িটির মতো আম হয়েছিল। সেগুলি পাকার পরে মালিকপক্ষ ও রিসর্টের প্রতিনিধিরা মন ভরে তার স্বাদ নিয়েছেন।’

  • Link to this news (এই সময়)