হন্যে হয়ে খুঁজছিল পুলিশ। বাঘাযতীনের বিবেকানন্দ পল্লীর বৃদ্ধাকে হত্যার ঘটনায় ছেলেকেই ‘হত্যাকারী’ বলে সন্দেহ করেছিলেন তদন্তকারীরা। ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিল বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মচারী অভিষেক মৈত্র। রবিবার বিকেলে পাটুলি থানায় এসে সে নিজেই জানাল, ‘আমিই মাকে মেরেছি।’ অভিযুক্ত যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কী কারণে যুবক নিজের মাকে হত্যা করেছে, তা খতিয়ে দেখেছেন তদন্তকারীরা।
বুধবার দুপুরে বিবেকানন্দ পল্লীর ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল মালবিকা মৈত্র নামে ৭২ বছরের বৃদ্ধার দেহ। ঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। ঘরের দরজা ভেঙে বৃদ্ধার অর্ধদগ্ধ দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বিছানাটির বেশিরভাগ অংশই পুড়ে গিয়েছিল। বৃদ্ধার গলার কাছে একটি বালিশও পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়েছিল, বালিশ চাপা দিয়ে বৃদ্ধার শ্বাসরোধ করে পরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
বৃদ্ধা ওই ঘরে একাই থাকতেন। প্রতিদিন অফিস বেরোনোর সময় গেটে তালা দিয়ে চাবি প্রতিবেশীকে দিয়ে যেত অভিষেক। সেদিনই এর ব্যতিক্রম হয়। বৃদ্ধার দেহ উদ্ধার হওয়ার পর থেকে ছেলের ফোনও ‘সুইচড অফ’ পাওয়া গিয়েছিল। ছেলের বিরুদ্ধে সন্দেহ বাড়তে থাকে তখন থেকেই।
তদন্তে নেমে পুলিশ বৃদ্ধার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ঘেঁটে দেখে। দিন কয়েকদিন আগেই বৃদ্ধার অ্যাকাউন্ট থেকে ছেলের অ্যাকাউন্টে ৯ লক্ষ টাকা পাঠানো হয়। মালবিকা মৈত্র একটি স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষিকা ছিলেন। টাকা-পয়সা নিয়ে বচসার জেরেই কি তাঁকে হত্যা করা হয়? সন্দেহ দানা বাঁধে পুলিশের মনে।
পুলিশ সূত্রে খবর, আত্মসমপর্ণের পর অভিষেক জেরায় জানিয়েছে ‘মানসিক অবসাদ’ থেকেই সে নিজের মাকে খুন করে। মালবিকা দেবী দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। সেই কারণেই অভিষেকের মনে অবসাদ তৈরি হয়েছিল নাকি খুনের পেছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।