‘গভীর ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আছেন, ছাত্রছাত্রীদেরও কয়েকজন আছেন…।’ রবিবার এমনটাই দাবি করলেন বর্ধমান রাজ কলেজের সদ্য সাসপেন্ড হওয়া অধ্যক্ষ নিরঞ্জন মণ্ডল। কর্তব্যে গাফিলতি, তহবিলের অব্যবস্থা ও কাজের ত্রুটির অভিযোগ তুলে শনিবার নিরঞ্জন মণ্ডলকে সাসপেন্ড করেছিল কলেজের পরিচালন সমিতি।
সাংবাদিক বৈঠক করে নিরঞ্জন মণ্ডল এ দিন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে আর্থিক তছরুপের কথা বলা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এরকম কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’ নিরঞ্জন মণ্ডলের দাবি, যে কারণ দেখিয়ে তাঁকে শোকজ় করা হয়, তার ভিত্তি নেই। তিনি তথ্যপ্রমাণ-সহ সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। তবুও পরিচালন সমিতি তা অগ্রাহ্য করে তাঁকে সাসপেণ্ড করেছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকেই রাজ কলেজে অধ্যক্ষকে নিয়ে অশান্তি অব্যাহত। সেই সময়ে রাজ কলেজের উন্নয়ন থমকে থাকা নিয়ে লাগাতার আন্দোলন শুরু করেছিলেন পড়ুয়ারা। কলেজ অধ্যক্ষ টাকা আটকে রাখছেন বলে অভিযোগ করেন অনেকেই। গত বছর অক্টোবর মাসে নিজের বাসভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে নিরঞ্জন জানান, পড়ুয়াদের দাবি ন্যায্য। তিনিও চান কলেজের উন্নয়ন হোক। তবে গভর্নিং বডি বা পরিচালন সমিতি টাকা না ছাড়ায় উন্নয়ন থমকে আছে।
পরিচালন সমিতি-সহ কলেজের একাংশের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলে সাসপেন্ডেড অধ্যক্ষ বলেন, ‘আমি নিজেই আর্থিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছি। সেই কারণেই আমার বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’ কোন ‘উপরমহল’-এর চাপে তাঁকে সাসপেন্ড করা হলো তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন নিরঞ্জন।
কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি স্বপনকুমার পান বলেন, ‘ওঁর সাসপেন্ড হওয়ার জন্যে যথেষ্ট কারণ আছে। সেই কারণগুলোর সত্যতা বিচার করা হচ্ছে। ছ’জনের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তাঁরা সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে আমাদের চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, আর্থিক অব্যবস্থার জন্য সরাসরি দায়ী অধ্যক্ষ। সেই কারণেই তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।’ উল্লেখ্য, কলেজেরই রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক বিজয় চাঁদ বর্তমানে অধ্যক্ষের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন।