মিল্টন সেন, হুগলি: দরজার সামনে লাল কিছু দিয়ে বড় করে লেখা 'মরণ'। বেশ কয়েকটি বাড়ির সামনে বড় বড় করে আঁকা হয়েছে ত্রিশূল ক্রস-সহ নানা চিহ্ন। আতঙ্কের গ্রাসে ইদের আগের দিনের সকাল। অদ্ভূত এই ঘটনা শনিবার গভীর রাতে ধনেখালি থানার অন্তর্গত পশ্চিমপাড়া গ্রামের।
শনিবার গভীর রাতে দীর্ঘ গলির প্রায় প্রত্যেক বাড়ির সামনেই এমন সব আঁকা হয়েছে। রবিবার সকালে বাড়ির দরজা খুলেই হতবাক বাসিন্দারা। বাড়ির সামনে রাস্তায় এই সব চিহ্ন লেখা দেখে রীতিমত আতঙ্কিত এলাকাবাসী। খবর পেয়েই গ্রামে পৌঁছান ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্র। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ধনেখালি থানার পুলিশ।
সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রাম ধনেখালির পশ্চিমপাড়া। গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দাই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। পাড়ার অদুরেই রয়েছে একটি মসজিদ। রবিবার ছিল শেষ রোজা। সোমবার খুশির ইদ। তাই শনিবার থেকেই শুরু হয়েছিল তোড়জোড়। অধিকাংশ বাসিন্দাই ব্যস্ত ছিলেন কেনাকাটা নিয়ে। সঙ্গে চলছিল ঘরবাড়ি, মসজিদ সাজানো। এককথায় ঈদের আনন্দে মেতেছিল গোটা পশ্চিমপাড়া গ্রাম। তাই শনিবার অনেক রাত পর্যন্ত জেগেছিল পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দারা। গভীর রাতে গোটা গ্রাম ঘুমিয়ে পড়তেই ঘটে এমন অবাক কাণ্ড।
এ দিন সকালে ঘরের দরজা খুলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকারবাসী। ইচ্ছাকৃত ভাবে ইদের আনন্দ নষ্ট করার জন্যই এই চক্রান্ত বলে দাবি বিধায়ক অসীমা পাত্রের। তিনি জানিয়েছেন, সংখ্যালঘু গ্রাম পশ্চিমপাড়া ঘুরে দেখেছেন, বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। লাল আবির দিয়ে গ্রামের একটা গলির প্রায় কুড়িটি বাড়ির সামনে রাস্তায় নানা রকমের লেখা হয়েছে। নানা চিহ্ন, শব্দ ইত্যাদি লেখা হয়েছে। এটা পরিষ্কার ওই লেখা বা চিহ্নের মুল উদ্দেশ্য ছিল এলাকায় আতঙ্ক ছড়ানো। চব্বিশ ঘণ্টা পরেই ইদ। আনন্দে মেতেছিল গোটা গ্রাম। কেউ সেই আনন্দ নষ্ট করার জন্য এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
তবে প্রশাসনের নিরাপত্তায় আতঙ্কের পরিবেশ কেটে ছন্দে ফিরেছে পশ্চিমপাড়া। আশ্বস্ত গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসীদের দাবি, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গোলমাল পাকানো বা আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা কোনও দিনই সফল হবে না। বাংলার মানুষ যথেষ্টই সচেতন। খবর পাওয়া মাত্রই প্রশাসন ব্যাবস্থা নিয়েছে। পুলিশ গ্রামে এসেছিল। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।