এই সময়: অক্সফোর্ডের কেলগ কলেজে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণের সময়ে যাঁরা বাধা দিয়েছিলেন, তাঁদের বাম, অতিবাম ও সাম্প্রদায়িক শক্তি বলে চিহ্নিত করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। সে দিন রাতেই সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই সামাজিক মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেয়, তাদের ইউকে শাখার সদস্যরা পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
কিন্তু গেরুয়া ব্রিগেডের ঠিক কারা ছিলেন অডিটোরিয়ামে, সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি। তৃণমূলের ছাত্র এবং সোশ্যাল মিডিয়া শাখা রবিবার সামাজিক মাধ্যমে একাধিক ছবি পোস্ট করে দাবি করেছে, গেরুয়া শিবিরের সুনীল ডোকওয়াল নামে এক ব্যক্তি, রজতশুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক চিকিৎসক সে দিন বিশৃঙ্খলার নেতৃত্বে ছিলেন।
বিজেপির উত্তরীয় গলায় সুনীলের একাধিক ছবি রয়েছে বলেও তৃণমূলের দাবি। এসএফআই ও গেরুয়া শিবির হাতে হাত মিলিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণের সময়ে অসভ্যতা করেছে বলে তৃণমূলের দলীয় মুখপত্রেও অভিযোগ করা হয়েছে।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য রবিবার সামাজিক মাধ্যমে একাধিক ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘অক্সফোর্ডে যাঁরা অসভ্যতা করেছিলেন তাঁদের আসল মুখোশ খুলে গেল। বাম–বিজেপি একসঙ্গে দেশ ও বাংলাকে অপমান করেছে। মানুষ এর যোগ্য জবাব দেবে।’
এসএফআইয়ের কারা পোস্টার হাতে সেখানে ছিলেন তা সিপিএমের ছাত্র সংগঠন নিজেরাই সে দিন ছবি দিয়ে এক্স হ্যান্ডলে জানিয়ে দেয়। এসএফআই’র ইউকে শাখার সম্পাদক নিখিল ম্যাথু, অস্বাথী অশোক সহ অন্তত ৮–১০ জন পড়ুয়া ওই বিক্ষোভে ছিলেন। যদিও গেরুয়া শিবির আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁদের কোনও সংগঠনের সদস্যদের উপস্থিতির কথা জানায়নি।
তৃণমূল রবিবার সুনীল–রজতকে বিজেপির লোক বলে চিহ্নিত করায় বঙ্গ বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘যদি ওরা বিজেপির সমর্থক হয় তা হলে সমস্যা কোথায়? বিদেশে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় শিষ্টাচার বজায় থাকুক আমরা চাই, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি দেখে কেউ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে প্রশ্ন করতে পারেন। মুখ্যমন্ত্রী দেশের অর্থনীতি নিয়ে যে কথা বলেছেন কেউ তার প্রতিবাদ জানাতেই পারেন।’
যদিও বাম–রাম একজোট হওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি। শমীকের বক্তব্য, ‘তৃণমূলই সামাজিক মাধ্যমে মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তীকে সমালোচনার নামে বামেদের অক্সিজেন দিতে চাইছে।’ গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে যোগসাজসের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে এসএফআই–ও। সংগঠনের নেতা সৃজন ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘কেলগ কলেজে এসএফআই সদস্যরা মুখ্যমন্ত্রীকে কিছু বিষয়ে নিজেদের মতো প্রশ্ন করেছেন। অন্য কেউ যদি সেখানে হাজির হন তার দায় এসএফআইয়ের নয়। জোড়াফুল ও বিজেপি জোট করে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে ভোটে লড়েছে, তাই তৃণমূলের মুখে রাম–বাম আঁতাঁতের অভিযোগ মানায় না।’
এদিকে, কেলগ কলেজের ঘটনার প্রতিবাদে আজ, সোমবার, হাজরা মোড়ে প্রতিবাদ সভা করতে চলেছে তৃণমূল সোশ্যাল মিডিয়া কর্মীদের সংগঠন ফ্যাম।