• বন্যার ছ’মাস পরেও মেলেনি টাকা, চিন্তায় কৃষকরা
    এই সময় | ৩১ মার্চ ২০২৫
  • দিগন্ত মান্না,পাঁশকুড়া

    এক বর্ষা পেরিয়ে আরও এক বর্ষা আসতে চলেছে। কিন্তু এখনও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সরকারি ক্ষতিপূরণ পেলেন না। পাঁশকুড়া ৩৫ শতাংশ কৃষক এমনই অভিযোগ করেছেন। ক্ষতিপূরণ না পেয়ে তাঁরা নিজের জমিতে নতুন করে চাষ করতে পারছেন না। ভাগ চাষ করে কোনও রকমে চলছে সংসার।

    গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে পাঁশকুড়া জুড়ে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল। চার জায়গায় কংসাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে ভেসে গিয়েছিল পাঁশকুড়া এবং কোলাঘাটের বিস্তীর্ণ এলাকা। তাতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছিল চাষের। বিঘের পর বিঘে জমির ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।

    পরিদর্শনে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে ফসল বিমার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। অভিযোগ, বন্যার প্রায় ছ'মাস পরেও পাঁশকুড়া এলাকায় ৩৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ক্ষতিপূরণ পাননি। কৃষকদের ফসল বিমার প্রিমিয়ামের টাকা রাজ্য সরকার দেয়। কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগে শস্যহানি হলে ফসল বিমার মাধ্যমে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেয় দায়িত্বপ্রাপ্ত বিমা সংস্থা।

    গত বছর বন্যায় গোটা পাঁশকুড়া ব্লককে ক্ষতিগ্রস্ত বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। জানুয়ারি মাসে ফসল বিমার ক্ষতিপূরণ দেওয়া শুরু হয়। ডেসিমাল পিছু কত টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে কোনও তথ্য প্রকাশ করেনি দায়িত্বপ্রাপ্ত বিমা সংস্থা। কৃষকদের একাংশের অভিযোগ, ইতিমধ্যে যাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে তাঁদের সঠিক নিয়ম মেনে টাকা দেওয়া হয়নি। অনেকে আবার অভিযোগ করেছেন, কম জমির মালিকদের বেশি টাকা দেওয়া হয়েছে। আর বেশি জমির মালিকরা কম টাকা পেয়েছেন।

    কোলাঘাট ব্লকের বাগিচা-কুমারচক গ্রামের বাসিন্দা প্রশান্ত সামন্ত বলেন, ‘আমার আর দাদার দু’জনের ২৫ ডেসিমাল করে জমি রয়েছে। দাদা ৪ হাজার ১০০ টাকা ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। আমি পেয়েছি মাত্র ৯০০ টাকা।’ আবার ৩৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত চাষি এখনও কোনও টাকাই পাননি। পাঁশকুড়ার প্রতাপপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ধুলিয়াপুর গ্রামের কৃষক সমীর ঘোড়াই বলেন, ‘ব্লক কৃষি অফিসে গিয়েও সাহায্য মেলেনি।’

    এ দিকে, কৃষি দপ্তর সূত্রের খবর, পাঁশকুড়া ব্লকে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করেছিলেন ৫০ হাজার ৬৫৫ জন। তাঁদের মধ্যে ৩৪ হাজার ১৩০ জন টাকা পেয়েছেন। ১৬ হাজার ৫২৫ জন টাকা পাননি। ৬০০ জনের ব্যাঙ্কের নথিতে গরমিল ছিল। সেগুলি সংশোধন করে পাঠানো হয়েছে।

    পাঁশকুড়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সুজিত কুমার রায় বলেন, ‘ফসল বিমায় আবেদন জানিয়েও অনেক কৃষক ক্ষতিপূরণ পাননি বলে অভিযোগ পেয়েছি। তাঁদের নাম সংগ্রহ করে তালিকা তৈরি করছি। দায়িত্বপ্রাপ্ত বিমা সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে।’

  • Link to this news (এই সময়)