• এমজেএন মেডিক্যাল সরছে চার কিমি দূরে, যাবে বিবেকানন্দ স্ট্রিটে
    এই সময় | ৩১ মার্চ ২০২৫
  • চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার

    শতাব্দী প্রাচীন কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের গোটাটাই স্থানান্তরিত হতে চলেছে। ইতিমধ্যেই এর জন্য পরিকল্পনা করে ফেলেছে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ। ভবিষ্যতের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

    রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরেও বিষয়টি নিয়ে কথা হয়ে গিয়েছে। শহরের সিলভার জুবিলি রোডের পাশে থাকা এই মেডিক্যাল কলেজটিকে চার কিলোমিটার দূরে বিবেকানন্দ স্ট্রিট এলাকায় নিয়ে যাওয়া হবে। বর্তমান হাসপাতালের একটি অংশে সংগ্রহশালা করার পরিকল্পনা রয়েছে।

    একটা আস্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল স্থানান্তরিত হচ্ছে, তা সচারচর দেখা যায় না। তাই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে তা কোচবিহারের পক্ষে এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হবে। পাশাপাশি সমস্যার কথা তুলে ধরছেন অনেকেই।

    মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ নির্মল কুমার মণ্ডল বলেন, ‘বর্তমান যেখানে হাসপাতাল রয়েছে সেখানে কী কী সমস্যা আছে, তা স্বাস্থ্য ভবন জানে। তাই এখান থেকে পুরোটা সরিয়ে না ফেললে ভবিষ্যতে সমস্যা হবে। বিষয়টি নিয়ে রোগী কল্যাণ সমিতি, স্বাস্থ্য ভবন এবং কলেজ কাউন্সিলে আলোচনা হয়েছে।’

    তিনি জানান, এই আলোচনার বিষয়বস্তু প্রস্তাব আকারে স্বাস্থ্য দপ্তরে পাঠানো হবে। কিন্তু তার আগে বর্তমান এমজেএন হাসপাতালের পুরনো হেরিটেজ ভবনটি সিভিল ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে বর্তমান পরিস্থিতির একটি রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। শীঘ্রই ইঞ্জিনিয়ার সমস্ত কিছু দেখে রিপোর্ট দেবেন। তারপর লিখিত প্রস্তাব ও সেই রিপোর্ট কলকাতায় পাঠানো হবে।

    ১৯০৮ সালে মহারাজা নীপেন্দ্র নারায়ণের আমলে এই হাসপাতালের কাজ শুরু হয়। এরপর ১৯৪০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন মহারাজার আমল মিলে পাঁচটি ওয়ার্ড ও বিভিন্ন ভবন হয়েছে। গত ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে নানা সংস্কারমূলক কাজ ও ভবনের সম্প্রসারণ হয়েছে। কিন্তু বর্তমান কর্তৃপক্ষ মনে করছে, হেরিটেজ তালিকায় থাকা এই গোটা হাসপাতালটির অবস্থা খুব একটা ভালো নয়।

    আগামী ১০-১৫ বছরের মধ্যে তার আরও ক্ষতি হতে পারে। তাই আগেভাগেই বিকল্প জায়গায় হাসপাতালটি স্থানান্তরিত করে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। বিবেকানন্দ স্ট্রিটে থাকা মেডিক্যাল কলেজের বিশাল জমিতে কয়েকটি ভবন তৈরি করে সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে।

    ইতিমধ্যেই সেখানে একটি আটতলা ভবন তৈরি হচ্ছে। আগামী এক বছরের মধ্যে হাসপাতালের বহির্বিভাগ সেখানে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরপর ধাপে ধাপে অন্যান্য ভবন তৈরি করেও সবটাই স্থানান্তরিত করা হবে। বর্তমানে কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে গড়ে প্রায় ৮০০ রোগী ভর্তি থাকেন। পাশাপাশি বহির্বিভাগে প্রায় দেড় হাজার রোগী প্রতিদিন চিকিৎসার জন্য আসেন।

    এ প্রসঙ্গে কোচবিহার হেরিটেজ কমিটির সদস্য ঋষিকল্প পাল বলেন, ‘বহু বছর ধরে শহরের মাঝখানে এই হাসপাতাল রয়েছে। এটা সকলের সুবিধা হয়। বেশ কিছুটা দূরে তা নিয়ে গেলে প্রথম প্রথম সকলেরই সমস্যা হবে। তাই একবারে সবটা না করে ধাপে ধাপে স্থানান্তরিত করা প্রয়োজন বলে মনে করি। আর এখানেও অন্তত প্রাথমিক কিছু পরিষেবা যেন থাকে। সেই বিষয়টিও দেখা উচিত।’

  • Link to this news (এই সময়)