হুগলির আরামবাগের তিরোল গ্রাম পঞ্চায়েতের শিবতলা এলাকায় রোজই বসে মদের আসর। গলা পর্যন্ত মদ্যপান করে বাড়ি ফেরেন এলাকার অধিকাংশ পুরুষ। অভাবের সংসারে নেশাগ্রস্ত স্বামীদের নিয়ে অতিষ্ঠ মহিলারা। স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েও লাভ হয়নি। রাগ পুষে রেখেছিলেন। সোমবার ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ দেখা গেল গ্রামের রাস্তায়।
টোটো করে মদের পেটি নিয়ে ডেলিভারি চলছিল। টোটো দাঁড় করিয়ে দেন গ্রামের প্রমীলা বাহিনী। পেটি নামিয়ে একের পর এক বোতল রাস্তায় আছাড় মারা হয়। গোটা রাস্তা ভেসে যাচ্ছে দেশি, বিদেশি মদে। ছড়িয়ে পড়েছে বোতল ভাঙা কাঁচের টুকরো। পরিস্থিতি সামলাতে ছুটে আসে পুলিশ।
পুলিশকে দেখে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সকলেই। ভাঙা বোতল নিয়ে পুলিশের দিকে তেড়ে যেতেও দেখা গিয়েছে কয়েকজন মহিলাকে বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে বাধ্য হয়ে মাথায় হেলমেট পরে মহিলাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন পুলিশ কর্মীরা।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, আরামবাগের তিরোল গ্রাম পঞ্চায়েতের মইগ্রামে বেআইনি ভাবে মদ বিক্রি চলছে দীর্ঘদিন ধরে। তাঁদের দাবি, পুলিশের একাংশ ও আবগারি দপ্তরের একাংশের মদতেই গ্রামে মদের ব্যবসা চলছে। গ্রামের পুরুষরা মদে আসক্ত হয়ে কষ্টার্জিত অর্থ উড়িয়ে দিচ্ছে। এমনকী মদের নেশায় বাড়ি ফিরে মহিলাদের মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। বারবার পুলিশকে জানিয়েও কোনও কাজ না হওয়াতেই এ বার রুখে দাঁড়ালেন মহিলারা।
বাসন্তি রায়, মিতা রায়রা বলেন, ‘আমরা পরের পরিবারে, মাঠে ঘাটে কাজ করে সংসার চালাই। আমাদের স্বামীরা যদি তিনশো টাকা উপার্জন করেন, তা হলে আড়াইশো টাকার মদ খেয়ে নেবে। ঘরে এসে স্ত্রীদের উপর অত্যাচার করবে। পুলিশকে বলেও লাভ হয়নি। আর সহ্য করব না।’ যদিও এই বিষয়ে আবগারি দপ্তরের কেউই মুখ খোলেননি। থানার এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘মহিলারা বিক্ষোভ দেখিয়েছে মদের ঠেক নিয়ে। শীঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’