গত সপ্তাহের পর আবারও আগুন সুতান জঙ্গলে। ২৪ ঘণ্টা পার, এখনও ধিকি ধিকি আগুন বাঁকুড়া দক্ষিণ বনবিভাগের ঝিলিমিলি রেঞ্জের সুতান জঙ্গলে। এর আগে শুশুনিয়ার জঙ্গল, সোনামুখীর জঙ্গলেও আগুন লাগার ঘটনা ঘটে।
দক্ষিণ বাঁকুড়ার একদিকে রাওতোড়া, অন্য দিকে বারিকুলের সীমানা সংলগ্ন সুতান। দু’পাশে ঘন জঙ্গল, মাঝখানে পিচের রাস্তা। বেশ কিছুটা গিয়ে এর পরই রানিবাঁধের সুতান, বারো মাইল জঙ্গল। প্রচুর পর্যটক আসেন এই জঙ্গল।
রবিবার সকাল থেকেই আগুন জ্বলছে জঙ্গলে। গত সপ্তাহেও আগুন লেগেছিল সুতান ও বারো মাইলের জঙ্গলে। সে সময় তা নিয়ন্ত্রণে আনা গেলেও রবিবার সকালে ফের আগুন লাগে জঙ্গলে। ফাগুনের ঝরাপাতায় কী ভাবে আগুন লাগছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
পুজোর পর থেকে এই জঙ্গলে পর্যটকদের ভিড় থাকে মোটামুটি মে মাস পর্যন্ত। অনেকেই ধূমপান করে তা এ দিক ও দিক ফেলে দেন। সেই অসচেতনতা বার বার এই ঘটনা ঘটাচ্ছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে বনদপ্তর। এ ছাড়াও কেউ ইচ্ছে করে এই কাজ করছে কি না, কারও ব্যক্তিগত স্বার্থ রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বাঁকুড়া দক্ষিণ বন বিভাগের বনাধিকারিক প্রদীপ বাউরি বলেন, ‘প্রতিনিয়ত জঙ্গলে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটে চলেছে। সাধারণ মানুষ বিড়ি, সিগারেট খেয়ে ফেলে দিক বা ইচ্ছাকৃত ভাবেই হোক, আগুন তো লাগছে, এটা দেখাই যাচ্ছে। আমাদের কর্মীরা নজরদারি চালাচ্ছেন।’
সুতান জঙ্গলে শালের সমারোহ দেখার মতো। বলা হয়, এ জঙ্গলের শালের মান সারা দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। শাল ছাড়াও পলাশ, কেন্দু, বহড়া, সোনাঝুরি নানা প্রজাতির গাছ রয়েছে। নানা প্রজাতির অর্কিডও রয়েছে এখানে। গত কয়েক দিনে সুতান, বারো মাইল জঙ্গলে আগুন লেগে বনাঞ্চলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বছরভর বনশুয়োর, হরিণ, খরগোশ, হায়না, শিয়াল থাকে এই জঙ্গলে। থাকে হরেক রকমের পাখিও। এই ধরনের আগুন লাগার ঘটনায় বিপদ তাদেরও।
গত সপ্তাহেই উত্তরবঙ্গের বৈকুণ্ঠপুর বন বিভাগের আওতাধীন আপালচাঁদ রেঞ্জের কাঠামবাড়ি জঙ্গলের একটা বড় অংশ জুড়ে আগুন লাগে। জঙ্গলে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা রেঞ্জের আউশগ্রাম, ছাতনা ফরেস্ট রেঞ্জের শুশুনিয়া, সোনামুখী জঙ্গলেও।