• সমাজে হত্যা ও ধর্ষণের প্রবণতা বৃদ্ধির নেপথ্যে প্রধান কারণ কী, মানসিক অবসাদ না কি সমাজমাধ্যম?...
    আজকাল | ০১ এপ্রিল ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: দেশজুড়ে একের পর এক হত্যা, গণপিটুনি ও ধর্ষণের মতো ঘটনা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। কখনও ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করতে, আবার কখনও ভয়াবহ হিংসার কারণে ঘটে চলেছে নৃশংস হত্যাকাণ্ড। কখনও দেহ কেটে টুকরো টুকরো করে ট্রলিব্যাগে ভরে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া, কখনও চুরির সন্দেহে গণপিটুনিতে হত্যা। আবার কখনও গ্রামাঞ্চলে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কারণেও নির্যাতন। এ ধরনের ঘটনা যেমন গ্রামে তেমনই শহর কলকাতাতেও ঘটেছে। যেমন, ট্যাংরা-কাণ্ড, রুবি-কান্ড, মাকে হত্যা ছেলের। আবার বেলেঘাটার হত্যাকাণ্ড কিংবা দক্ষিণ কলকাতার চারু মার্কেট থানার যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু। এ যেন এক সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। 

    এই বিষয়ে আজকাল ডট ইনের তরফ থেকে কথা বলা হয়েছিল মনোরোগ বিশেষজ্ঞ রঞ্জন ভট্টাচার্য ও পায়েল তালুকদারের সঙ্গে। ডা. রঞ্জন নচিকেতার গানের কলি উদ্ধৃত করে বলেন, "'অস্থির সময়ের দরজায় দাঁড়িয়ে মাঝে মাঝে আয়নায় দেখ মুখ।' একদিকে যেমন এই হিংসার নেপথ্যে ভয়াবহ ক্রোধ কাজ করছে, আবার কখনও মানুষ তাঁর নিজস্ব সত্ত্বা বিসর্জন দিয়ে (ডি-ইন্ডিভিজুয়েশন) তড়িৎগতিতে নিজের ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও রাগ উগড়ে দেয় (কন্ট্যাজিয়ন)। আপাত তুচ্ছ অপরাধকারীকে সাজা দেওয়ার জন্য আবার প্রতিবাদের কন্ঠস্বর নীরব হয়ে আসে (বাইস্ট্যান্ডার্ড এফেক্ট)।'' 

    তাঁর সংযোজন, ''পরকীয়ার ক্ষেত্রে সিগময়েড ফ্রয়েডের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, মানুষ সব কিছুর ভাগ করতে পারে, কিন্তু নিজের সবচেয়ে কাঙ্খিত মানুষটি অন্য কেউ নিয়ে নেবে ('লস অফ লাভ অবজেক্ট'), এটা মেনে নিতে পারে না। এর প্রতিকার সমাজবিচ্ছিন্নতা কাটাতে হবে, পারিবারিক বন্ধন মজবুত করতে হবে। কোনও মানসিক সমস্যা থাকলে বিশেষজ্ঞ দ্বারা সুচিকিৎসা করতে হবে। মানুষকে সচেতন করতে সরকারকে আরও উদ্যোগ নিতে হবে।" তিনি আরও বলেন, "আমরা যেন কোন অবস্থাতেই 'পয়েন্ট অফ নো রিটার্ন'-এ না চলে যাই, খেয়াল রাখতে হবে।"

    এ বিষয়ে ডা. পায়েল বলেন, "এ ধরনের ঘটনার একদিকে যেমন সমাজমাধ্যম প্রচণ্ডভাবে প্রভাব ফেলছে। অন্যদিকে, মানুষের কাজ নিয়ে চাপ, পারিবারিক পরিস্থিতি, অতিরিক্ত হিংসা এবং স্বার্থপরতাও এর পিছনে একটা বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর জন্য ছোটবেলা থেকেই প্রকৃত শিক্ষা এবং পরিবেশ দেওয়ার দরকার। একই রকম ভাবে সমাজমাধ্যমের ভাল দিকটিকে নিয়ে খারাপ দিকটিকে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করতে হবে। ছোটদের হাতেও প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল না দিতে পারলে ভাল হয়।"
  • Link to this news (আজকাল)