• রামনবমীতে পুরুলিয়ায় শক্তি প্রদর্শনের প্রস্তুতি বিজেপির
    বর্তমান | ০১ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: আগামী বছরই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এবছরের রাম নবমীর ঝাঁ‌জ যেন একটু বেশিই। রামনবমী থেকেই পুরুলিয়া জেলার সমস্ত বিধানসভা আসন দখলে ঝাঁপাচ্ছে গেরুয়া শিবির। বিজেপিকে প্রতিহত করতে পাল্টা কৌশল খুঁজতে শুরু করেছে তৃণমূলও। জেলায় ক্রমশই চড়তে শুরু করেছে উত্তেজনার পারদ। 

    জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় মিছিলটি হয় পুরুলিয়া শহরেই। মিছিল বজরং দল ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ব্যানারে হলেও সামনের সারিতে থাকেন গেরুয়া শিবিরের নেতা-কর্মীরা। প্রায় ৩০হাজারের বেশি মানুষ পা মেলান মিছিলে। এবছর সেই মিছিলে ৫০হাজার লোকের টার্গেট নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কাশীপুর, রঘুনাথপুর, আদ্রা, পাড়া, লালপুর থেকে শুরু করে বলরামপুর, ঝালদায় বড় আকারে মিছিল হয়। এই মিছিলেই নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করেন বিজেপি নেতারা। বিজেপির জেলা সহ সভাপতি গৌতম রায় বলেন, মিছিলের ভিড়ই নির্ধারণ করে দেবে আগামী বিধানসভার ফলাফল। রাজ্যজুড়ে যেভাবে নির্দিষ্ট একটি ধর্মকে তোষণ করছে তৃণমূল সরকার, তার বিরুদ্ধে রাস্তায় নামার জন্য মুখিয়ে রয়েছে মানুষ। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা পিন্টু বাউরি বলেন, আমরা বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে প্রচার চালাচ্ছি। মানুষ বুঝতে পারছে কেন মিছিলে পা মেলানো জরুরি। এবারের সমস্ত মিছিলেই সর্বোচ্চ লোক সমাগম হবে। 

    গত কয়েক বছর রামনবমী উপলক্ষ্যে তৃণমূলও পাল্টা মিছিল বের করেছিল। যদিও এবছর এখনও কোনও কর্মসূচি নিয়ে উঠতে পারেনি তৃণমূল। জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, এখনও নির্দিষ্ট কোনও কর্মসূচি নির্ধারণ হয়নি। তবে অন্যান্য বছরের মতো এবছরও আমরা রাম নবমীর বিভিন্ন মিছিলে হাঁটা সাধারণ মানুষের জন্য জল, বাতাসা, ছোলার বন্দোবস্ত করব। 

    গত কয়েক বছর ধরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে রামনবমীর দিন অশান্তির ছবি সামনে এসেছে। জেলার কোথাও যাতে অশান্তি না হয়, তা নিশ্চিত করতে চাইছে পুলিস। সূত্রের খবর, রামনবমীর প্রত্যেক কর্মসূচিতেই বিপুল পুলিস মোতায়েন থাকবে। মিছিলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভিডিও রেকর্ডিং করা হতে পারে। কোনও মিছিলে যাতে অস্ত্রের ব্যাবহার না হয়, তাও নিশ্চিত করতে চাইছে পুলিস। জেলা পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, শৃঙ্খলা ও শান্তি বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। মিছিলে অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না। 

    রামনবমীকে কেন্দ্র করে বিজেপি যেভাবে সম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছে, তার বিরুদ্ধে মানুষকে সতর্ক থাকার বার্তা দিচ্ছে তৃণমূল। রামনবমী নিয়ে তৃণমূলের মহিলা সংগঠনের সভানেত্রী সুমিতা সিং মল্ল বলেন, কোনও একটি ধর্ম ‘বিপদে’ রয়েছে বলে সেই সম্প্রদায়ের মানুষকে তাতানো হচ্ছে। কিন্তু, এর ফল ভুগতে হচ্ছে লক্ষ লক্ষ খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষকে। ধর্মের জিগির তুলে সম্প্রীতির চারণক্ষেত্র বাংলাকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে একশ্রেণির ‘উগ্র’ রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা। এর বিরুদ্ধে কাঁধে কাঁধ রেখে রুখে দাঁড়াতে হবে আমাদেরই। ছড়িয়ে দিতে হবে সম্প্রীতির বার্তা। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সুব্রত মহাত বলেন, রামনবমী উৎসবকে সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের স্বার্থে ব্যবহার করেছে তৃণমূল ও বিজেপি। রাজ্যের সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ এবং শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে আবেদন, আপনারা সতর্ক থাকুন। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে কোনও সুযোগ দেবেন না।
  • Link to this news (বর্তমান)