দেবাশিস দাস
বেহালা এবং মহেশতলা এলাকায় জমা জলের সমস্যা দূর করতে নতুন করে খাল কাটার পরিকল্পনা করেছে কলকাতা পুরসভা। প্রতি বছর বর্ষায় বেহালা এবং মহেশতলা লাগোয়া এলাকায় জমা জলে ভোগান্তি হয় এলাকাবাসীর। ওই এলাকার ২২টি ছোট খালকে মূল চড়িয়াল খালের সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা করেছে পুরসভার নিকাশি বিভাগ। এর মধ্যে প্রথম দফায় ৪টি খাল সংযুক্ত করার কাজ শুরু হচ্ছে।
প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা প্রকল্পের আওতায় সম্প্রতি ভারত সরকারের কাছ থেকে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা আর্থিক সাহায্য পেয়েছে পুরসভা। সেই টাকাই খরচ করা হবে নিকাশি উন্নয়নের কাজে। নিকাশি বিভাগের আধিকারিকদের আশা, বহু বছর ধরে বেহালা এবং মহেশতলার মধ্যবর্তী এলাকায় জল জামার যে সমস্যা রয়েছে, তা আর থাকবে না।
আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, যে ২২টি ছোট খালকে মূল চড়িয়াল খালের সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা হয়েছে, তার অধিকাংশই এখন গতি হারিয়ে রুগ্ণ নালায় পরিণত রয়েছে। প্রথমে ড্রেজিং করে খালগুলিতে গতি আনার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। পরিস্থিতি এমন যে ড্রেজিং করেও এই সব খালে বর্ষার সময়ে গতি আনা যায়নি। বসতি এলাকার জল পাম্প করে এই সব খালে ফেলেও লাভ হয় না।
যে মণিখালি খালের সঙ্গে এই সব ছোট খাল যুক্ত ছিল, সেটিরও অবস্থা এমন যে বছরের কোনও সময়েই জল সরতে চায় না। নিকাশি বিভাগের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলেই খালগুলির এই দুর্দশা। তাঁদের অভিযোগ, অনেক জায়গায় খালের উপরে জমি দখল করে বহুতল হয়ে গিয়েছে। দুই বহুতলের মাঝে শীর্ণ, সঙ্কীর্ণ এক জলের ধারা শুধু খালের অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে। কোথাও আবার সেই অস্তিত্বটুকুও নেই।
মণিখালি খালের সঙ্গে যুক্ত এই সব খালে এখন ঠিকঠাক জোয়ার–ভাটাও খেলেত পারে না। তাই এই ছোট খালগুলিকে মূল চড়িয়াল খালের সঙ্গে যু্ক্ত করে দিলে গতিহারা খালগুলিতে আবার জল সরতে পারে বলে আশা করছেন নিকাশি বিভাগের আধিকারিকরা। জমা জলের সমস্যাও মিটবে। আপাতত বাইশ বিঘা, সোনামুখী এবং আরও দু’টি খাল দিয়ে শুরু হচ্ছে নতুন করে খাল কাটার কাজ।