ফের ভয়াবহ বাজি বিস্ফোরণ দক্ষিণবঙ্গে। এ বার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ধোলাহাট থানার অন্তর্গত দক্ষিণ রায়পুরের ৩ নম্বর ঘেরিতে। সোমবার রাতে সেই বিস্ফোরণে প্রাণ হারান তিন দুধের শিশু-সহ এক পরিবারের সাত জন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি অন্য সদস্যের মৃত্যু হয় মঙ্গলবার সকালে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল আট। বাজি কারখানার মালিক তুষার বণিক ও চন্দ্রকান্ত বণিকের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দিনের বাজির ব্যবসা ওই পরিবারের। সবুজ বাজি তৈরির লাইসেন্সও ছিল তাদের। তবে সবুজ বাজি তৈরির লাইসেন্সের আড়ালে চলছিল অবৈধ বাজি তৈরি চলছিল কি না সেই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তদন্তের প্রয়োজনে নমুনা সংগ্রহ করছে ফরেনসিক। বিস্ফোরণস্থলে মোতায়েন বিশাল পুলিশ বাহিনী। বিস্ফোরণের জায়গা থেকে পাশেই একটি ঘর থেকে উদ্ধার বাজি তৈরির মশলা-সহ নানান সরঞ্জাম। উদ্ধার প্রচুর তার। স্থানীয় সূত্রে খবর, বিস্ফোরণ স্থলের আশপাশেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে প্রচুর বারুদ ভর্তি ড্রাম।
বাজি বিস্ফোরণের ফলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। গোটা ঘটনাস্থল এখন পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। মর্মান্তিক ঘটনায় মঙ্গলবার সকালেও হাহাকারের চিত্র গোটা এলাকায়। বণিক পরিবারের বাড়িতেই ঘটেছে বিস্ফোরণ। বাজির ব্যবসা মূলত সামলাতেন তুষার বণিক ও চন্দ্রকান্ত বণিক। বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছেন তুষার ও চন্দ্রকান্ত বণিকের বাবা অরবিন্দ বণিক (৬৫), ঠাকুমা প্রভাবতী বণিক (৮০), চন্দ্রকান্তের দুই সন্তান অর্ণব বণিক (৯), অস্মিতা বণিক (আট মাস), তুষারের দুই সন্তান অনুষ্কা বণিক (৬), অঙ্কিত বণিক (ছয় মাস), চন্দ্রকান্তের স্ত্রী সান্ত্বনা বণিকের (২৮) মৃত্যু হয়েছে। তুষারের স্ত্রী সুতপা বণিককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় গতকাল রাতে। এদিন সকালে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। জানা গিয়েছে, তাঁর শরীরের ৭৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল ।
বিস্ফোরণের সময় বাড়িতে ছিলেন না তুষার, চন্দ্রকান্ত ও তাঁদের মা। ফলে বণিক পরিবারের ওই তিন সদস্য বেঁচে গিয়েছেন। ঘটনায় বিপজ্জনক বস্তু ঘরে মজুত, অনিচ্ছাকৃত খুনের ধারা-সহ ফায়ার সার্ভিস অ্যাক্টে মামলা রুজু হয়েছে।