• অমবস্যার কটালে রায়মঙ্গল নদীর বাঁধে ধস, আতঙ্ক
    এই সময় | ০১ এপ্রিল ২০২৫
  • এই সময়, সন্দেশখালি ও পাথপ্রতিমা: অমাবস্যার ভরা কটালের মধ্যেই প্রত্যন্ত সুন্দরবনের রায়মঙ্গল নদীর বাঁধে বিপজ্জনক ধস। সোমবার দুপুরে সন্দেশখালি–২ ব্লকের আতাপুরের তিন নদীর মোহনার কাছে হঠাৎ প্রায় ১০০ ফুট নদী বাঁধ ধসে যায়। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে মণিপুর পঞ্চায়েতের উদ্যোগে বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করা হয়। খবর দেওয়া হয় সেচ দপ্তরে। কিছুক্ষণের মধ্যে জেসিবি গাড়ি নামিয়ে দ্রুত বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়।

    অন্যদিকে, অমাবস্যার কটালের জেরে জোয়ারের ঢেউয়ে রবিবার দুপুর থেকে পাথরপ্রতিমার দূর্বাচটি গ্রাম পঞ্চায়েতের কামদেবনগর এলাকার গোবদিয়া নদীর বাঁধে একটি স্লুইস গেটের পাশে ফাটল দেখা দেয়। সেই ফাটল থেকে হু হু করে নোনা জল ঢুকতে শুরু করে পাশের লোকালয়ে। এলাকার বাসিন্দারা তড়িঘড়ি বাঁধ মেরামতিতে হাত লাগায়। কিন্তু তার আগেই নদীর নোনা জলে প্লাবিত হয়েছে প্রায় ৫০ বিঘা কৃষিজমি ও বেশ কয়েকটি পুকুর।

    ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুরে জোয়ারের জল একটু নীচে নামতেই সন্দেশখালির মণিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের আতাপুরে ছোট কলাগাছি, বড় কলাগাছি ও রায়মঙ্গল নদীর মিলনস্থানে হঠাৎ নদী বাঁধে ধস নামে। বাঁধের মাঝ বরাবর দেখা দেয় বড় বড় ফাটল। ধসের খবর জানাজানি হতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন পঞ্চায়েতের প্রধান প্রসেনজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, সন্দেশখালি–২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দিলীপ মল্লিক–সহ এলাকার জনপ্রতিনিধিরা। তাঁরাও এলাকার বাসিন্দাদের সাহায্যে দ্রুত নদীবাঁধ সংস্কারের কাজে হাত লাগান। পরে জেসিবি গাড়ি দিয়ে দ্রুত নদী বাঁধ সংস্কার করা হয়।

    খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন সেচ দপ্তরের আধিকারিকরাও। ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত নদী বাঁধ মেরমতিতে হাত লাগিয়েছে সেচ দপ্তর। ভরা কটালে নদীর জোয়ারের জলস্তর বেড়ে যাওয়ার ফলেই নদীর বাঁধে ধস নেমেছে বলে দাবি সেচ দপ্তরের আধিকারিকদের। সন্দেশখালি–২ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি দিলীপ মল্লিক বলেন, ‘আপাতত বাঁধ মেরামত করা হয়েছে। যাতে বড় বিপর্যয় না হয় তার জন্য বাঁশ ও শালবল্লা, মাটির বস্তা দিয়ে দ্রুত বাঁধ মেরামতি করা হয়েছে। সেচ দপ্তরের পাশাপাশি পঞ্চায়েতের তরফ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের উপর নজর রাখা হচ্ছে।’

    অন্যদিকে, পাথরপ্রতিমাতেও জমি ও পুকুরে নোনা জল ঢোকায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন এলাকার কৃষক ও মাছচাষিরা। রবিবারের পর সোমবারও জোয়ারের সময় জলস্ফীতি হয়। বর্ষার আগে বাঁধ মেরামত না হলে পুরো এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। ইতিমধ্যে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বাঁধ মেরামতির জন্য সেচ দপ্তরের নজরে এনেছে বিষয়টি। ওই এলাকার আরও একটি মাটির বাঁধ বেশ নিচু। ফলে সেই বাঁধ উপচে জল ঢোকার আশঙ্কাও থাকছে।

    এলাকাবাসীরা মাঠ ও পুকুর থেকে নোনাজল বের করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর জানা বলেন, ‘ওই এলাকার স্লুইস গেটের পাশ থেকে বাঁধে ফাটল ধরেছে। তড়িঘড়ি স্থানীয় বাসিন্দারা বাঁধ মেরামত করেছে। সেচ দপ্তরকে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য বলা হয়েছে।’

  • Link to this news (এই সময়)