• আইআইটি-র স্নাতকোত্তরে সাফল্য বেলুড় বিদ্যামন্দিরের
    এই সময় | ০১ এপ্রিল ২০২৫
  • সৌমিত্র ঘোষ, বেলুড়

    দেশের আইআইটিগুলিতে উচ্চশিক্ষার জন্য স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তির সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষায় এ বার বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্ররা অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছেন। বেলুড় বিদ্যামন্দিরের রসায়ন, জীববিদ্যা, পদার্থবিদ্যা ও গণিত বিভাগের মোট ১৮ জন ছাত্র এ বার মেধা তালিকায় উল্লেখযোগ্য স্থান পেয়েছেন।

    বিদ্যামন্দির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, রসায়নে সর্বভারতীয় প্রথম স্থান পেয়েছেন বিদ্যামন্দিরের ছাত্র সুভোন ঘোষ। পদার্থবিদ্যায় নীতীশ হালদার সর্বভারতীয় পঞ্চম স্থান পেয়েছেন। রসায়নে একাদশ স্থানে রয়েছেন সায়ন ধাড়া, এ ছাড়া ৫৪ থেকে ১২৩ তম স্থানে রয়েছেন আরও ৬ জন।

    জীববিদ্যা বিভাগে সর্বভারতীয় চতুর্থ স্থান পেয়েছেন সোহমরাজ মাইতি (প্রাণিবিদ্যা), মনসিজ জ্যোতি ১১শ স্থান (মাইক্রোবায়োলজি) ও প্রিয়াংশু মিশ্র ৪৯ তম স্থান (মাইক্রোবায়োলজি) পেয়েছেন। মাইক্রোবায়োলজির আরও দুই ছাত্র ৫৯ ও ১১৩ তম স্থানে রয়েছেন। অর্পণ গিরি ২৭ ও প্রিয়ব্রত ভট্টাচার্য ৫৪ স্থান পেয়েছেন পদার্থবিদ্যায়। গণিতে রিচিক সামন্ত ৮৭ ও সঙ্কেত দত্ত ১০৭ স্থানে রয়েছেন।

    সফল ছাত্রদের মধ্যে প্রিয়াংশু মিশ্র ‘এই সময়’–কে ফোনে জানান, তিনি সর্বভারতীয় মেধা তালিকায় বায়োটেকনোলজিতে ৪৯ তম স্থান ছাড়াও সর্বভারতীয় ‘গেট’ পরীক্ষাতেও জীববিদ্যায় চতুর্থ স্থান পেয়েছেন। তিনি আপাতত বায়োটেকনোলজিতে স্নাতকোত্তর পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

    প্রিয়াংশু পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি থেকে পড়াশোনা করে উচ্চ মাধ্যমিকের পরে বিদ্যামন্দিরে জীববিজ্ঞান নিয়ে স্নাতক স্তরে ভর্তি হন। এ বার স্নাতকোত্তরে পড়াশোনা করে উচ্চতর শিক্ষার পথে এগোতে চান। নেহাতই নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে বিদ্যামন্দিরে স্নাতক পড়তে আসার পরে এখানকার শিক্ষা পদ্ধতি ও শিক্ষার পরিবেশই তাঁকে সাফল্যের পথে এগিয়ে দিয়েছে বলে জানান এই মেধাবী ছাত্র।

    বেলুড় বিদ্যামন্দিরের উন্নত ল্যাবরেটরি ও লাইব্রেরির পরিকাঠামো–সহ শিক্ষার সামগ্রিক পরিবেশে ছাত্রদের সঙ্গে শিক্ষকদের সুসম্পর্কের মধ্য দিয়ে যে সামগ্রিক উন্নতি হয়, তারই প্রতিফলন ঘটেছে এ বারের সাফল্যে। এই বিষয়ে একমত সফল ছাত্ররা। রসায়নে দেশের মধ্যে প্রথম হয়ে বড় তাক লাগিয়েছেন বিদ্যামন্দিরের ছাত্র সুভোন ঘোষ। নদিয়ার করিমপুরের ছোট কৃষক পরিবারের ছেলে সুভোন বিদ্যামন্দিরের শিক্ষার পরিবেশ ও পরিকাঠামো নিয়ে উচ্ছ্বসিত। তিনি বলেন, ‘আমরা প্রয়োজনমতো সব বই পেয়েছি কলেজের লাইব্রেরি থেকে। ল্যাবরেটরিতেও প্রত্যেকের জন্য আলাদা ডেস্ক বরাদ্দ থাকে।’

    বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দিরের অধ্যক্ষ স্বামী মহাপ্রজ্ঞানানন্দ বলেন, ‘ছাত্রদের আমরা প্রথম থেকেই সর্বভারতীয় পরীক্ষাগুলির সম্বন্ধে সচেতন করি। প্রথম থেকেই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষাগুলি সম্বন্ধে কাউন্সেলিং করা হয়। এই ধরনের পরীক্ষায় বসতে গেলে বিশেষ প্রস্তুতির দরকার হয়। সেগুলি যথাসম্ভব প্রতিষ্ঠান থেকেই দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। আমাদের অ্যাকাডেমিক সিলেবাসও সে ভাবেই করা হয়।’

    উল্লেখ্য, গেট পরীক্ষায় দেশের বিজ্ঞান ও ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সেরা ছাত্রছাত্রীরা বিটেক, এমএসসি করার পর এমটেক পড়ার জন্য প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। সেখানে বিদ্যামন্দিরের ছাত্ররা স্নাতক স্তরেই সাফল্যের সঙ্গে নিজেদের প্রমাণ করেছেন। একে বড় সাফল্য বলেই মনে করছেন এখানকার কর্তৃপক্ষ।

  • Link to this news (এই সময়)