সুমন ঘোষ, খড়্গপুর
জন্ডিস–আক্রান্ত সুকান্তপল্লির পানীয় জলে আর কোনও সংক্রমণ নেই বলে দাবি করল মেদিনীপুর পুরসভা। সম্প্রতি পানীয় জল থেকে এলাকায় জন্ডিস ছড়ায়। খবর পাওয়ার পর থেকেই স্বাস্থ্য দপ্তর ও পুরসভা পদক্ষেপ করে। পানীয় জলের পাইপের ছিদ্র ঠিক করা থেকে প্রতিদিন এলাকার পানীয় জল সংগ্রহ করে পরীক্ষাও করা হয়।
পাইপের ছিদ্র ঠিক করার পর পানীয় জলে আর কোনও কলিফর্ম মেলেনি বলে জানিয়েছেন মেদিনীপুর পুরসভার পুরপ্রধান সৌমেন খান। তিনি বলেন, ‘ঘটনা জানার পরেই প্রতিদিন জল পরীক্ষা করা হয়। পাইপের ছিদ্রও ঠিক করা হয়েছে। রবিবারের পানীয় জল পরীক্ষার রিপোর্ট থেকে পরিষ্কার, জলে আর কোনও রকম ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস নেই।’
একটি সমস্যা মিটলেও পুরসভার জল প্রকল্প বাস্তবায়িত না হওয়া নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন উঠছে। কারণ, শহরে আম্রুত প্রকল্পে ২০১৬ সালে ২০০ কোটি টাকা মঞ্জুর হয়। কেন আট বছর পরেও প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হল না? জানা গিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে বিরক্ত রাজ্য সরকারও।
পুরসভা সূত্রে খবর, সম্প্রতি রাজ্য সরকার তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। এর মধ্যেই কাজটি সম্পূর্ণ করতে বলা হয়েছে। ওই প্রকল্পে মেদিনীপুর শহরের বেড়বল্লভপুর, মহাতাবপুর, কুইকোটা, রাজাবাজার, জজ কোর্ট, রাঙামাটি এলাকায় সাতটি নতুন ওভারহেড রিজ়ার্ভার হওয়ার কথা। গান্ধীঘাটে জল বিশুদ্ধকরণ প্রকল্প তৈরি, ১৩০ কিলোমিটার নতুন পাইপলাইন বসানো এবং সেই সঙ্গে পুরসভার ২৫টি ওয়ার্ডে ৬০ হাজার পরিবারে পানীয় জলের সংযোগ দেওয়ার কথা।
কিছু কাজ হলেও এখনও ১৮, ১৯, ২০, ২৪ নম্বর ওয়ার্ড-সহ একাধিক জায়গায় নতুন পাইপলাইন বসানোর কাজ যেমন হয়নি, তেমনই বাড়িতে বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগও দেওয়া যায়নি। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৩০ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় ৯৫ কিলোমিটার নতুন পাইপলাইন বসানো গিয়েছে।
৬০ হাজার পরিবারের পরিবর্তে মাত্র ২৫ হাজার পরিবারকে জলের সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। বাকি কাজ সম্পূর্ণ করতে আর কতদিন লাগবে? মেদিনীপুর পুরসভার পুরপ্রধান সৌমেন খান বলেন, ‘আমরা আশা করছি তিন মাসের মধ্যেই সমস্ত কাজ সম্পূর্ণ করতে পারব। রাজ্যও আমাদের তিন মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে।’
পুরসভার যুক্তি, প্রকল্প রূপায়িত না হওয়ার পিছনে অনেকগুলি কারণ রয়েছে। মাঝে করোনার জন্য কাজ করা যায়নি। তারই সঙ্গে পুরসভায় নির্বাচন না হওয়ায় প্রশাসক হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্বে ছিলেন মহকুমাশাসক। ২০২৩ সাল থেকে নতুন করে পুরো উদ্যমে কাজ শুরু হয়েছে। এই কারণেই প্রকল্পের কাজ এখনও শেষ করা যায়নি।