• মাছের জোগান বাড়াতে সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধের সময়সীমা বাড়ানোর দাবি
    এই সময় | ০১ এপ্রিল ২০২৫
  • এই সময়, মন্দারমণি: সমুদ্রে মাছের জোগান কমছে। অভিযোগ, যথেচ্ছ ট্রলিংয়ের (ট্রলারে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা) কারণে বছরে একটা বিশেষ সময় জুড়ে সমুদ্রে মাছের প্রজনন ব্যাহত হচ্ছে। তাই মাছের উৎপাদন বাড়াতে সমুদ্রে ট্রলিং বন্ধ রাখার সময়সীমা বাড়ানোর দাবি তুললেন মৎস্যজীবীরা।

    রাজ্য মৎস্য দপ্তর মাছের উৎপাদন বাড়াতে বা মাছের প্রজনন যাতে ব্যাহত না হয় তার জন্য প্রতি বছর ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত ৬০ দিন ব্যান পিরিয়ড বা সমুদ্রে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে। কিন্ত মৎস্যজীবীদের দাবি, ৬০ দিন নয়, সমুদ্রে ট্রলিং বন্ধ রাখার সময়সীমা ১৮০ দিন করতে হবে।

    গত শনিবার মন্দারমণির কাছে দাদনপাত্রবাড়ে দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরামের বার্ষিক সন্মেলনে এই দাবি তোলেন মৎস্যজীবীরা। তাঁদের বক্তব্য, ব্যান পিরিয়ডের সময়সীমা বাড়ানো হলে মৎস্যজীবীদের লাভ ছাড়া ক্ষতি হবে না।

    সংগঠনের সভাপতি দেবাশিস শ্যামল সোমবার বলেন, ‘যথেচ্ছ ট্রলিংয়ের ফলে সমুদ্রে মাছের জোগান ৬০ শতাংশ কমে গিয়েছে। এখন ট্রলিংয়ের খরচ তুলতে ট্রলারগুলিতে ছোট ফাঁসের জাল ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে ছোট মাছও ধরা পড়ছে জালে। এর ফলে সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মাছের প্রজনন ও বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে। যার করণে ট্রলিং বন্ধের বা ব্যান পিরিয়ডের সময়সীমা বাড়িয়ে ১৮০ দিন করার দাবি জানিয়েছি।এতে মাছের প্রজনন ও বৃদ্ধি যেমন ব্যাহত হবে না, তেমনি রুলি, তাপড়া, ভোলা চিংড়ি–সহ ছোটবড় সামুদ্রিক মাছের জোগান বাড়বে। ট্রলিং নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে মৎস্যজীবীদের না খেয়ে মরতে হবে সমুদ্রে মাছের আকালের কারণে।’

    মার্চ–এপ্রিল থেকে সামুদ্রিক মাছেদের প্রজননের মরশুম শুরু হয়। অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের পাশাপাশি জুনে বৃষ্টি নামলেই ইলিশও ডিম পাড়ার জন্য উপকূলের দিকে আসে।মৎস্যজীবীদের কথায়, মাছেদের প্রজননের জন্যে শুধু ব্যান পিরিয়ড করলে হবে না। ছোট ছোট মাছকে বড় হতে সময় দেওয়ার জন্যে সমুদ্রে মাছ ধরার সময়সীমাও বাড়াতে হবে। ডিম পাড়ার পর যদি ট্রলিংয়ের জালে ছোট মাছ ধরা পড়ে তা হলে মাছের আকার যেমন বড় হবে না, তেমনি সমুদ্রে নানা ধরনের মাছের পরিমাণ কমে যাবে।

    সংগঠনের তরফে রাজ্য মৎস্য দপ্তরের কাছে ট্রলিংবন্ধ বা ব্যান পিরিয়ড বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আবেদন পাঠানো হয়েছে। যদিও ব্যান পিরিয়ডের সময়সীমা বাড়ানো হবে কি না সে নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি কাঁথি মৎস্য দপ্তরের সহ মৎস্য অধিকর্তা সমন সাহা। তিনি শুধু বলেন, ‘রাজ্য মৎস্য দপ্তর এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এই দাবি নিয়ে আমার বলার কিছু নেই।’

  • Link to this news (এই সময়)