চাকরি জীবনের শেষ দিনে মর্মান্তিক পরিণতি চালকের, ঝাড়খণ্ড রেল দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল মুর্শিদাবাদের গঙ্গেশ্বরের ...
আজকাল | ০১ এপ্রিল ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: চাকরি জীবনের শেষ দিন, তারপরেই অবসর জীবন। কিন্তু শেষ দিনেই মর্মান্তিক পরিণতি। ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ জেলার বারহাইট এলাকায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ শহরের বাসিন্দার। তিনি ওই ট্রেনের ইঞ্জিন চালক ছিলেন। নাম গঙ্গেশ্বর মাল (৬৫)। বাড়ি জিয়াগঞ্জের ভট্টপাড়া এলাকায়। চাকরির শেষ দিনে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়। ইতিমধ্যে গঙ্গেশ্বরের দেহ আনার জন্য ঝাড়খণ্ডের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে তিনটে নাগাদ গোড্ডা জেলা লালমাটি এলাকা থেকে একটি কয়লা বোঝাই ট্রেন ফরাক্কা এনটিপিসির উদ্দেশে যাচ্ছিল। ঝাড়খণ্ডের বারহাইট এলাকায় লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি খালি মালগাড়ির ইঞ্জিনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় ওই মালগাড়িটির। দুটি ইঞ্জিনের সংঘর্ষে অগ্নিদগ্ধ হয়ে পুড়ে মৃত্যু হয় অম্বুজ মাহাতো এবং গঙ্গেশ্বর মালের। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ছ'জন।
জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ ঘোষ জানান, 'পাঁচ বছর আগে চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর এক্সটেনশনে ট্রেনের চালক হিসেবে কাজ করছিলেন জিয়াগঞ্জের ভট্টপাড়ার বাসিন্দা গঙ্গেশ্বর মাল। মার্চ মাসের ৩১ তারিখে তাঁর কর্মজীবনের শেষ দিন ছিল। ঝাড়খণ্ড থেকে আজিমগঞ্জ জংশনে ফিরে এসে ট্রেন ইঞ্জিন জমা করে তাঁর বাড়ি ফেরার কথা ছিল।' আড়ো জানান, 'এলাকায় অত্যন্ত মিশুকে এবং জনপ্রিয় ছিলেন গঙ্গেশ্বর মাল। জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ শহরের সাধারণ মানুষের মধ্যে সাঁতার শিক্ষার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির জন্য তাঁর অবদান অসামান্য।' স্থানীয় সূত্রের খবর, সময় সুযোগ পেলেই এলাকার কচিকাঁচাদেরকে বিভিন্ন পুকুরে সাঁতার শেখাতে নেমে যেতেন গঙ্গেশ্বরবাবু। মুর্শিদাবাদ জেলায় প্রতি বছর অনুষ্ঠিত বিশ্বের দীর্ঘতম সাঁতার প্রতিযোগিতায় গঙ্গেশ্বর সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতেন। ওই প্রতিযোগিতার অংশ হিসেবে জিয়াগঞ্জ শহর থেকে অনুষ্ঠিত ১৯ কিলোমিটার সন্তরণ প্রতিযোগিতাতেও গঙ্গেশ্বর উপস্থিত থাকতেন। জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, 'গঙ্গেশ্বরবাবুর উদ্যোগে এবং পুরসভার প্রচেষ্টায় জিয়াগঞ্জ শহরে গড়ে উঠছে অত্যাধুনিক একটি সুইমিং পুল। আমাদের পরিকল্পনা ছিল চাকরিজীবন থেকে অবসর নেওয়ার পর তাঁকে ওই সুইমিং পুলে প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োগ করার। কিন্তু তার আগেই এই দুর্ঘটনা ঘটে গেল।' তিনি আরও বলেন, 'গঙ্গেশ্বরবাবুর দেহ আনার জন্য আমরা যাবতীয় বন্দোবস্ত করেছিলাম। কিন্তু আমরা খবর পেয়েছি রেলের তরফ থেকে তাঁর দেহ মুর্শিদাবাদ জেলায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। গঙ্গেশ্বরবাবুর পরিবারের যে কোনও প্রয়োজনে আমরা তাঁদের পাশে রয়েছি।'