কর্মজীবনে বাকি ছিল আর মাত্র ২ দিন। সম্ভবত জীবনে শেষ ট্রেন চালাচ্ছিলেন। অবসরের ৪৮ ঘণ্টা আগে ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলো লোকো পাইলটের। মঙ্গলবার ভোরে ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ জেলার বারহেট স্টেশনের কাছে দুটি মালগাড়ির সংঘর্ষ হয়। আর সেই সংঘর্ষে মৃত্যু হয় মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ পুরসভার ভট্টপাড়ার বাসিন্দা গঙ্গেশ্বর মালের (৬৫)। দুর্ঘটনাটিতে প্রাণ হারিয়েছেন গঙ্গেশ্বরের সহকারী লোকো পাইলট ফরাক্কার তিলডাঙার বাসিন্দা অম্বুজ মাহাতো (৩৫)। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ৬ জন। গঙ্গেশ্বরের সহকর্মীরা জানান, তিনি সারাজীবন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে লোকো পাইলটের দায়িত্ব পালন করেছেন। এই দুর্ঘটনায় শোকস্তব্ধ গঙ্গেশ্বরের আত্মীয়-পরিজনেরা।
তাঁর দেহ আনার জন্য ঝাড়খণ্ডের উদ্দেশে রওনা দেন গঙ্গেশ্বর মালের পরিবারের লোকজন। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে গোড্ডা জেলার লালমাটিয়া থেকে একটি কয়লা বোঝাই ট্রেন ফরাক্কা এনটিপিসির উদ্দেশে রওনা দেয়। ঝাড়খণ্ডের বারহেট এলাকায় লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা একটি খালি মালগাড়ির ইঞ্জিনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় ওই মালগাড়িটির। দু'টি ইঞ্জিনের সংঘর্ষের জেরে আগুন লেগে যায়। অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান খালি মালগাড়ির লোকো পাইলট অম্বুজ মাহাতো এবং গঙ্গেশ্বর মাল।
জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, ‘গঙ্গেশ্বর মাল অত্যন্ত মিশুকে ছিলেন। তিনি অসাধারণ সাঁতার প্রশিক্ষক ছিলেন। এই নিয়ে এলাকায় তাঁর সুনাম রয়েছে। গঙ্গেশ্বরবাবু এবং পুরসভার প্রচেষ্টায় জিয়াগঞ্জ শহরে গড়ে উঠছে অত্যাধুনিক একটি সুইমিং পুল। চাকরি জীবন থেকে অবসর নেওয়ার পরে সেখানেই প্রশিক্ষক হিসেবে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন গঙ্গেশ্বরবাবু। কিন্তু তার আগেই এই দুর্ঘটনা।‘