চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার
রেলের ভাঁড়ে মা ভবানী দশা। তাই নিউ কোচবিহার রেল স্টেশনের ২৫০ কোটি টাকার আধুনিকরণ প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তার পরিবর্তে নাকের বদলে নরুনের মতো ৫০ কোটি টাকায় নতুন প্রকল্প করে মুখরক্ষা করতে চাইছে রেল। স্টেশনের পরিকাঠামোর কাজের দায়িত্বে থাকা সংস্থা রেল ল্যান্ড অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অথরিটিকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তার পরিবর্তে স্টেশন উন্নয়নের কাজ রেল নিজেরাই করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার অভয় গণপত সনপ বলেন, ‘আগের প্রকল্পটি হচ্ছে না। তার পরিবর্তে ৫০ কোটি টাকার মধ্যে স্টেশনের উন্নয়নমূলক কাজ হবে। শীঘ্রই তার ডিপিআর করে বোর্ডে পাঠানো হবে।’
প্রায় ২৫০ কোটি টাকায় এই স্টেশন বিশ্বমানের হয়ে উঠবে বলে ২০২৩ সালে ঘোষণা করেছিল রেল। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই স্টেশনটির ভবন ২০১২-১৩ সালে রাজবাড়ির আদলে তৈরি করা হয়। কিন্তু অভিযোগ, কাজ অর্ধেক শেষ হওয়ার পর এক দশক ধরে সে ভাবেই পড়ে রয়েছে।
পরবর্তীতে ২০২৩ সালে যে ডিপিআর তৈরি হয় সেখানে দু’টি পর্যায়ে কাজটি করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। একটি সংস্থাকে দিয়ে নকশা ও ডিপিআর তৈরি করে পাঠানো হয়েছিল রেল বোর্ডে। কাজটি করার কথা ছিল রেল ল্যান্ড অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অথরিটির। তবে এতকিছু হওয়ার পরও পরিকল্পনাটি কী কারণে অনুমোদন পেল না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
রেল এখন নিজেই এই কাজটি করবে। ৫০ কোটি টাকার মধ্যে প্রকল্পটি শেষ করার নির্দেশ রয়েছে। রাজবাড়ির আদলে তৈরি হওয়ার স্টেশন ভবনের বাকি অংশের কাজ হবে। তার জন্য পুরনো অর্ধেক ভবনটি ভেঙে ফেলা হবে। এর পাশাপাশি সমস্ত প্লাটফর্মের উন্নতিকরণ করা হবে। আধুনিক আলোকসজ্জা হবে স্টেশনে। নির্মাণ হবে উঁচু প্ল্যাটফর্ম শেড।
তবে প্রশ্ন উঠছে, এত ঢাক ঢোল পিটিয়ে এবং কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে এজেন্সি দিয়ে নকশা করানো হলো কেন? তারপর সেই ফাইল দু'বছরের বেশি পড়ে থাকার পর এখন সেই কাজ আর হবে না বলা হচ্ছে। এর পিছনে আর্থিক সমস্যাই মূল কারণ বলে জানা গিয়েছে। ন্যূনতম টাকায় কাজটি করে নিতে চাইছে রেলকর্তারা।
এ বিষয়ে কোচবিহারের সাংসদ জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া বলেন, ‘একটা অনুমোদিত ঘোষিত প্রকল্প হচ্ছে না এটা খুবই দুঃখজনক। অনেকদিন ধরেই এই কাজটি নিয়ে গড়িমসি করছিল। এর আগে আলিপুরদুয়ারে ডিআরএমকে গিয়েও বিষয়টি বলা হয়েছিল। বাংলার প্রতি বঞ্চনার এটি আরেকটি বড় উদাহরণ।’