এই সময়, বর্ধমান: বিজেপির রাজ্য সভাপতি কে হবেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে। গেরুয়া শিবিরের অন্দরে ভাসছে বিভিন্ন নাম। রাজ্য সভাপতির চেয়ার নিয়ে এই দড়ি টানাটানির মধ্যেই বুধবার পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু পোস্টারকে কেন্দ্র করে নতুনভাবে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। যেখানে রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যকে চাওয়া হয়েছে বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি হিসেবে।
শমীক নিজে অবশ্য কড়া ভাষায় এই ‘পোস্টার রাজনীতি’র নিন্দা করেছেন। তিনি মনে করছেন, যাঁরা বিজেপিকে চেনেন, জানেন, তাঁরা কখনও পোস্টার সেঁটে রাজ্য সভাপতি চাইবেন না।বুধবার পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা, ভাতার, বর্ধমান, গলসি সহ বেশ কিছু জায়গায় দেখা যায় ‘বিজেপি বাঁচাও মঞ্চ’–র ব্যানারে কিছু পোস্টার পড়েছে। যেখানে লেখা হয়েছে, ‘একমাত্র শমীক ভট্টাচার্য সভাপতি হলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার হবে।’এই পোস্টারে দেওয়া হয়েছে শমীকের ছবিও। আর সেই ছবির নিচে লেখা হয়েছে, ‘সংসদে তিনি যেমন বলেন, তেমন রাস্তাতেও মমতার বিরুদ্ধে জোরদার লড়াই করতে পারবেন। তাই দলের সভাপতি হিসেবে আদি কার্যকর্তা শমীক ভট্টাচার্যকেই চাই।’
এই পোস্টারের কথা জানাজানি হতেই অস্বস্তিতে পড়েছেন বিজেপির শমীকপন্থীরা। কারণ, তাঁরা জানেন, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ‘পোস্টার রাজনীতি’ ভালো চোখে দেখেন না। অতীতে যেসব বিজেপি নেতাদের নামে এরকম পোস্টার পড়েছে দলের আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তাঁদের সবাইকে তার খেসারত চোকাতে হয়েছে। তাই পোস্টারের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই শমীকপন্থী বিজেপি নেতারা জোর গলায় এর বিরোধিতা শুরু করেছেন।
এমনকী, শমীক নিজেও এর নিন্দা করে বলেন, ‘এই পোস্টার কে মেরেছেন, কারা মেরেছেন আমার জানা নেই। তাঁরা পার্টির কর্মী হয়ে থাকলে গর্হিত অন্যায় করেছেন। কোনওদিন পোস্টার সেঁটে, নেতার বাড়িতে ছুটে, পার্টি অফিসের সামনে জমায়েত করে বিজেপিতে কোনও সাংগঠনিক পদ পাওয়া যায় না। বিজেপির কেউ করে থাকলে এটা তাঁদের বিচ্যুতি। আর অন্য কেউ করে থাকলে আমি বলতে পারব না।’
বিজেপির বর্ধমান পূর্ব সাংগঠনিক জেলার সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, এমন পোস্টার তৃণমূল–ই সেঁটেছে। তিনি বলেন, ‘এটা তৃণমূল বাঁচাও মঞ্চের পোস্টার। এ নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি না। তৃণমূল বুঝেছে, ২০২৬–এর নির্বাচনে ওরা জোর ধাক্কা খাবে। তাই বিজেপির মধ্যে দ্বন্দ্ব লাগিয়ে বাঁচতে চাইছে।’
কালনার তৃণমূল নেতা তথা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান তপন পোড়েল পাল্টা বলেন, ‘তৃণমূল এ সব নোংরা রাজনীতি করে না। বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল কতটা প্রকট তা এই ঘটনাতেই প্রমাণ হচ্ছে।’