নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ২৬ হাজার চাকরিপ্রার্থীর আজ চাকরি গেল। আর তা নিয়ে সরগরম হয়ে যায় রাজ্য–রাজনীতি। এই রায়ের পর চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে তাঁদের ভবিষ্যৎ কার্যত অনিশ্চিত। আর এই ঘটনার জন্য রাজ্য সরকার এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনকে দায়ী করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একইসঙ্গে চাকরিহারাদের পাশে থাকতে নিজের রিলিফ ফান্ড থেকে বেতন দিতে বলে খোঁচা দিলেন শুভেন্দু। আর এই সরকারকে উৎখাত করার কথাও জানালেন।
এদিকে বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্ট অনেক সুযোগ দিয়েছিল যোগ্য এবং অযোগ্যদের তালিকা পৃথক করার জন্য। কিন্তু স্কুল সার্ভিস কমিশন তাও পৃথক করতে পারেনি। রাজ্য সরকারেরও যথেষ্ট গাফিলতি ছিল। মুখ্যমন্ত্রী আজ নবান্ন থেকে সরাসরি জানিয়ে দেন, এই ঘটনার পিছনে ষড়যন্ত্র করেছে সিপিএম–বিজেপি। তারই পাল্টা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘এখন উনি অনেকেরই দোষ দিচ্ছেন। কিন্তু সেই কবে ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়া পরেশ অধিকারীর মেয়েকে চাকরি পাইয়ে দিয়েই প্যানেল ভাঙা শুরু হয়েছিল।’
অন্যদিকে ২০১৬ এসএসসির শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় অযোগ্যদের চাকরি বাতিলের দাবিতে আদালতে সওয়াল করেছিলেন বিকাশবাবু। ওই মামলায় ২০২৪ সালে পুরো প্যানেলটাই বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টও কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছে। আর এখন যে পরিস্থিতি তৈরি হল তা নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, ‘সদ্য চাকরিহারাদের পাশে থেকে মুখ্যমন্ত্রী রিলিফ ফান্ডের টাকা থেকে যেন বেতনের ব্যবস্থা করেন। যখন চিটফান্ডের জেরে কিছু চ্যানেল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তখন সাংবাদিকদের নিজের রিলিফ ফান্ডের টাকা থেকে বেতন দিয়েছিলেন। আপনি জানতেন চিটফান্ডের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত তাই দিয়েছিলেন। এবার প্রায় ১৯ হাজার যোগ্য চাকরিহারাদেরও সেই ভাবে বেতন দিন। যাতে তাঁরা অর্থকষ্টে না ভোগেন।’
এছাড়া এই রায়ের পর শিক্ষকদের পরিবারের অন্ধকার নেমে আসে। সুপ্রিম কোর্টের রায় শোনানোর পরই রাজ্য সরকারকে নিশানা করে পথে নেমেছে বিজেপি যুবমোর্চা। আর সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে বিক্ষোভও দেখান দলীয় কর্মীরা। আর শুভেন্দুর কথায়, ‘রামনবমীর পরেই কলকাতাতে বড় মিছিল করবে বিজেপি। দলের নির্দেশে এপ্রিল মাস থেকেই পর্যায়ক্রমে নবান্ন অভিযান–সহ একাধিক কর্মসূচি হবে। যার মূল দাবিই থাকবে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ। রাজ্য সরকার অযোগ্যদের বাঁচানোর চেষ্টা করছিল। অযোগ্যদের জন্য যোগ্যদের বলি দেওয়া হয়েছে।’