বঙ্গে ঘুরে না দাঁড়ালে বনসাই হয়েই থাকবে সিপিএম, বলছে প্রায় সব রাজ্য, বৃন্দা-মিনাক্ষীদের খোঁপায় তামিল ঐতিহ্যের ‘গজরা’
আনন্দবাজার | ০৪ এপ্রিল ২০২৫
বাংলায় ভোটে হারের ধারাবাহিকতার কথা পার্টি কংগ্রেসের মঞ্চে স্বীকার করে নিলেন বাংলার প্রতিনিধি। আত্মসমালোচনার ঢঙেই বললেন, সাংগঠনিক দুর্বলতা রয়েছে। আর গোটা দেশের বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধিদের কথায় উঠে এল বাংলার পার্টির প্রতি সংহতি। খোলাখুলিই তাঁরা বললেন, বঙ্গে দল ঘুরে দাঁড়াতে না পারলে, সার্বিক ভাবে জাতীয় রাজনীতিতেও প্রাসঙ্গিতা ফিরবে না সিপিএমের।
বুধবার থেকে মাদুরাই শহরে শুরু হয়েছে সিপিএমের ২৪তম পার্টি কংগ্রেস। প্রথম দিন পলিটব্যুরোর সমন্বয়ক প্রকাশ কারাট রাজনৈতিক খসড়া প্রতিবেদন এবং রাজনৈতিক রণকৌশলগত লাইনের পর্যালোচনা রিপোর্ট পেশ করেছিলেন। দ্বিতীয় দিন থেকে শুরু হয়েছে প্রতিনিধিদের আলোচনা। বৃহস্পতিবার বাংলার পক্ষে আলোচনা করেছেন দেবাশিস চক্রবর্তী এবং দার্জিলিংয়ের জেলা সম্পাদক সমন পাঠক। সূত্রের খবর, দেবাশিস যুব সংগঠনের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। বঙ্গে যে সংগঠনের নেতৃত্বে রয়েছেন মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। যে মিনাক্ষী আপাতত মাদুরাইয়ে সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস পরিচালনার সভাপতিমণ্ডলীতেও রয়েছেন। জানা গিয়েছে, দেবাশিস এ-ও বলেছেন, গত তিন বছরে বাংলায় আন্দোলনের ঝাঁজ বৃদ্ধি পয়েছে। তবে স্বাধীন শক্তি বিকাশের প্রশ্নে যে দুর্বলতা রয়েছে, তা-ও মেনে নিয়েছে বাংলা। সূত্রের খবর, সমন বলেছেন, পরিচিতিসত্তার রাজনীতি এবং সেই চক্রব্যূহ থেকে বেরিয়ে আসার উপায় কী হবে সে বিষয়ে দলে গভীর মন্থন প্রয়োজন।
সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য বৃন্দা কারাটও একটি সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, দলের মূল নজর এখন বাংলা এবং ত্রিপুরার সংগঠনকে বৃদ্ধি করা। বাংলার একাধিক প্রতিনিধি একান্ত আলোচনায় বলছেন, ২০১১ সালের পর থেকে একাধিক পার্টি কংগ্রেসে দলের দক্ষিণী লবি বাংলাকে খানিক উপহাসই করত। কিন্তু এ বার তা দেখা যাচ্ছে না। বরং সহমর্মিতাই দেখাচ্ছে তারা। এমনিতে পার্টি কংগ্রেসস্থল সেজে উঠেছে তামিল সংস্কৃতিতে। বৃহস্পতিবার দেখা গেল বৃন্দা, মিনাক্ষীদের সাজেও তামিল ছোঁয়া লেগেছে। তামিল মহিলাদের সাজের অন্যতম ঐতিহ্য খোঁপায় সাদা ফুল বাঁধা। যাকে বলা হয় ‘গজরা’। বৃন্দা, মিনাক্ষী-সহ বহু মহিলা প্রতিনিধিই গজরা বেঁধেছিলেন খোঁপায়।
সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস উপলক্ষে আয়োজিত দেশের সার্বভৌমত্ব বিষয়ক আলোচনায় বৃহস্পতিবার বক্তা ছিলেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী তথা ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিন। ছিলেন কর্নাটকের কংগ্রেস সরকারের উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী এমসি সুধাকর। স্ট্যালিন বৃহস্পতিবারই তামিলনাড়ু বিধানসভায় ঘোষণা করেছেন, চেন্নাইতে তিনি কার্ল মার্ক্সের বৃহৎ মূর্তি বসাবেন। একাধিক প্রস্তাবও পেশ হয়েছে সিপিএমের পার্টি কংগ্রেসে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ ভূমিকা।