প্রাথমিক স্কুলে ২ হাজার ২৩২ পদে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে কাটল জটিলতা। ২০২২ সালে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া চলাকালীন যাঁরা ডিএলএড পাশ করেননি, তাঁরাও চাকরিতে সুযোগ পাবেন বলে শুক্রবার জানাল সুপ্রিম কোর্ট। এ দিন বিচারপতি পিএস নরসিমহার ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে।
২০২২ সালে প্রাথমিকে ১১,৭৬৫টি শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল পর্ষদ। সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, টেট উত্তীর্ণ এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডিএলএড প্রার্থীরা এবং ডিএলএড প্রশিক্ষণরত প্রথম বর্ষের উত্তীর্ণরাও আবেদন করতে পারবেন। পর্ষদের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল মামলা। কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পর্ষদের সিদ্ধান্তেই সবুজ সঙ্কেত দিয়েছিল।
ওই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে হয়েছিল মামলা। বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ পর্ষদের বিজ্ঞপ্তি খারিজ করে। পাঠরত বা প্রশিক্ষণরত প্রার্থীরা নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না জানিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ। এই মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে ৯৫৩৩ জন চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু বাকি ২২৩২টি পদে নিয়োগে অগ্রাধিকার কারা পাবেন সেই প্রশ্ন তুলে মামলা হয়।
সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি ওঠে বিচারপতি পিএস নরসিমহার ডিভিশন বেঞ্চে। মার্চ মাসের প্রথমেই সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে পর্ষদ জানিয়েছিল, নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ার আগেই প্রার্থীদের নির্দিষ্ট শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকার হাইকোর্টের নির্দেশ তারা মেনে নিচ্ছে। এই মামলায় রায়দান স্থগিত রেখেছিল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার এই মামলায় রায় দিল সর্বোচ্চ আদালত। আদালতের রায়, ২০২২ সালে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া চলাকালীন যাঁরা ডিএলএড পাশ করেননি, তাঁরাও চাকরিতে সুযোগ পাবেন। এর ফলে ২,২৩২টি প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতা কাটল।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে এই নিয়োগ প্রক্রিয়াতে অংশ নিয়েছিলেন ২০১৪ এবং ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণরা। কিন্তু ২০১৪ সালের টেট পাশ কিন্তু ডিএলএড প্রশিক্ষণহীনদের একাংশকে নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়। এনসিটিই (ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার্স এডুকেশন)–র বিধি মানতে ২০১৪ সালের টেট পাশ করা একাংশ ২০২০–তে ডিএলএডের দু’বছরের কোর্স করতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু এই বিজ্ঞপ্তি জারির সময়ে তাঁদের প্রশিক্ষণ পূরণ হয়নি। নিয়োগ প্রক্রিয়া যখন সম্পূর্ণ হবে সেই সময় তাঁরা প্রশিক্ষণের শংসাপত্র পেয়ে যাবেন এই যুক্তিতে নিয়োগের প্যানেলে কেন নাম থাকবে না সেই প্রশ্ন তুলে মামলা করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে স্বাভাবিক ভাবেই স্বস্তিতে তাঁরা।