হাওড়ায় রাম নবমীর মিছিলে সায় আদালতের, তবে বেঁধে দিল বিশেষ শর্ত
আজ তক | ০৪ এপ্রিল ২০২৫
হাওড়ায় রামনবমীর মিছিল ঘিরে চলা বিতর্কের অবসান। কলকাতা হাইকোর্ট শর্তসাপেক্ষে মিছিলের অনুমতি দিল। তবে ধাতব অস্ত্র বহন করা যাবে না, শুধুমাত্র PVC দিয়ে তৈরি 'ধর্মীয় প্রতীক' রাখা যাবে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, দুই সংগঠনের ৫০০ জন করে মোট ১০০০ জন অংশ নিতে পারবেন মিছিলে।
মিছিলের সময়সীমা ও বিশেষ নিয়ম
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, অঞ্জনী পুত্র সেনা সকাল ৮.৩০ থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মিছিল করতে পারবে। অন্যদিকে, বিকেল ৩টা থেকে ৬টা পর্যন্ত মিছিল করবে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের কাছে অবশ্যই পরিচয়পত্র থাকতে হবে।
বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এদিন স্পষ্ট করেন, কোনও সংগঠনই নির্ধারিত সংখ্যা ছাড়িয়ে যেতে পারবে না। তিনি বলেন, 'আমি থামালে সবাইকে থামাব, শুধু রাজনৈতিক দল নয়।' পাশাপাশি, পুলিশের তদন্তের গুরুত্ব নিয়েও মত দেন তিনি।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের ভূমিকা
বিচারপতি পুলিশের ভূমিকাতেও নজর দিয়েছেন। তিনি বলেন, 'বাঁকুড়ায় অনুমতি দিয়েছিলাম, কিন্তু ওটা আলাদা বিষয় ছিল। তবে এখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন নেই। পুলিশের ক্ষমতা আছে, তবে সেই ক্ষমতার প্রয়োগ যথাযথ হওয়া দরকার।'
২০২২ সালের পর পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। পাশাপাশি, দুর্গাপুজোর উদাহরণ টেনে বলেন, 'কোথাও দুর্গাপুজোয় গণ্ডগোল হলে কি দুর্গাপুজো বন্ধ করে দেব?' পুলিশের দায়িত্বের প্রসঙ্গে বিচারপতি পরামর্শ দেন, 'যদি কোনও এলাকা নিয়ে পুলিশ উদ্বেগ প্রকাশ করে, তবে সেটা রাজ্যের জন্য ভালো বার্তা নয়।'
মিছিলের রুট নিয়ে বিতর্ক
গেরুয়া শিবির যে রুটে মিছিল করতে চেয়েছিল, রাজ্য তা পরিবর্তন করে। কিন্তু পূর্বনির্ধারিত রুটেই মিছিলের দাবি জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় অঞ্জনী পুত্র সেনা ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। অন্যদিকে, স্থানীয় বাসিন্দারাও মিছিলের বিরোধিতায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাঁদের আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় আদালতে জানান, “এত বিতর্কের ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা স্যান্ডউইচ হয়ে গেছেন, দ্রুত সমাধান প্রয়োজন।”
বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এরপর জানতে চান, ওই এলাকায় প্রায়ই কি অশান্তি হয়? জবাবে আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্য চাইলে সমস্যা কমতে পারে, রাজনৈতিক নেতাদের অংশগ্রহণ বন্ধ করা হোক।”
এরপর রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, রুট পরিবর্তন না করে, একদলকে সকালে ও অন্য দলকে বিকেলে মিছিলের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। আদালত সেই প্রস্তাবকেই অনুমোদন দেয়।