শিক্ষা দুর্নীতিতে মুখ্যমন্ত্রীত্ব হারান হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমপ্রকাশ চৌটালা। দুর্নীতি মামলায় ১০ বছরের জেলের কাটতে হয়েছিল তাঁকে। একই অবস্থা হতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, দাবি বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র ও রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ সুকান্ত মজুমদারদের। এদিন দিল্লিতে বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্রের সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে মমতাকে তীব্র আক্রমণ করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। পাশাপাশি, সম্বিত পাত্র এও আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, "মমতা এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করবে যাতে এই চাকরির বিষয়টি ধাপাচাপা দেওয়া যায়।"
এদিন সম্বিত পাত্র বলেন, "দিদি জেল যাবেন, আলবাত জেল যাবেন। একবার বিজেপি সরকার তৈরি হলে মমতার বিরুদ্ধে আমাদের পুরো ফোর্স মিলে শায়েস্তা করবে। মমতার অবস্থা হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী ওমপ্রকাশ চৌটালার মত হবে। পার্থ জেলে থাকলে দিদি কেন নয়?... আজই ওনার পদত্যাগ করা উচিত। মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে এঁদের টাকা দেওয়া উচিত।"
প্রসঙ্গত, ২০০০ সালে হরিয়ানায় জুনিয়র বেসিক শিক্ষক পদে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ৩,২১৬ জনকে নিয়োগ করা হয়েছিল। ২০০৮ সালে ওই মামলায় দোষী সব্যস্ত হয়েছিলেন ওমপ্রকাশ চৌটালা। ঘটনার তদন্তের ভার ছিল সিবিআই-এর হাতে। ২০১৩ সালে দিল্লি কোর্ট চৌটালা এবং তাঁর ছেলে অজয় সিংহ চৌটালাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়। সাজা হয়েছিল আরও ৫৩ জনের।
এদিন মমতাকে দায়ী করে সুকান্ত বলেন, "মমতা সবাইকে দোষ দিয়েছেন। আজ সিপিএম, আইনজীবী, বিচারপতি সবাইকে দুষছেন। এদিকে যে নেতারা টাকা নিলেন, দুর্নীতি করলেন তাদের বাঁচাতে ক্যাবিনেট বসালেন। ১, ৫০০ পদ তৈরি করলেন অযোগ্যদের চাকরি দেওয়ার জন্য। এই ক্যাবিনেটের নেত্রীকে জেলের ভিতরে থাকা উচিত। এতে পুরোপুরি দেখা যাচ্ছে, তিনি চোরকে বাঁচাতে কাজ করেছেন। মমতা এঁদের বাঁচাতে পারত। এরা সবাই অযোগ্য নয়। সবাই টাকা দিয়ে চাকরি পায়নি। আমি নিজেও এসএসসি দিয়ে চাকরি শুরু করেছিলেন। আমার স্ত্রীও শিক্ষিকা। বাংলায় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সম্মান ছিল। কাল দেখলাম গোল্ড মেডেলিস্ট, টপাররাও চোখের জল ফেলেছেন। ইএমআই কীকরে দেবেন, সংসার কীভাবে চালাবেন? এসবের জন্য দায়ী একমাত্র মমতা।"
সুকান্ত আরও বলেন, "হাইকোর্ট বলেছিল দুধ ও জল আলাদা করতে। মমতার উপদেষ্টারা বলেছেন, বাঁচতে হলে, তৃণমূল নেতাদের বাঁচাতে দুধ ও জল এক করে দিতে। এবার পাশার উল্টো চাল পড়েছে। হাইকোর্ট যা বলেছিল, সুপ্রিম কোর্টও একই রায় দিল। মমতা যা চালাকি করেছেন তার মাশুল দিতে হচ্ছে। এই রায়ে আমাদের একটাই প্রশ্ন, এত মানুষ যে পরিশ্রম করে চাকরি পেলেন, সকলের চাকরি গেলেন। পুরো মল বানিয়ে ফেলেছে। শপিং মলে মানুষ চাকরি কিনতে আসেন। কেন্দ্র সরকার চায় মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ত্রাণ তহবিল থেকে যোগ্য প্রাপকদের টাকা দিক। কালীঘাটেক কাকু ওরফে জীবনকৃষ্ণ ভদ্রের একটি অডিও প্রকাশ্যে আসে। তাতে বলেছিলেন, পার্থ লোভী। অভিষেকের কথাও বলেন। একের পর এক চুরি তৃণমূলের সময় হয়েছে, এবার মমতার যাওয়া উচিত। নিজে থেকে যেতে চাইলে যান, নয়তো মানুষ কান ধরে নামাবে।"
এখানেই শেষ নয়। সম্বিত পাত্রের সুরে সুকান্তও বলেন, "সরকারি শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে কোনও আপস করা উচিত নয়। সরকারের কাছে আবেদন করব। আইনজীবীদের সঙ্গে শলা পরামর্শ করুন। যদি আবার সুপ্রিম কোর্টে মামলা করতে চান আসুন। এরা পথে বসেছেন। ৮ তারিখ দ্বিতীয় মামলা আসতে চলেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী হবেন যাঁকে শিক্ষা দুর্নীতির জন্য জেলে যেতে হবে। মমতা পাপ করেছেন।"