• মুকুন্দপুর কাণ্ডে ছেলে-বৌমার বিরুদ্ধে মামলা রুজু
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৪ এপ্রিল ২০২৫
  • সুইসাইড নোটের ছত্রে ছত্রে লেখা ছেলে-বৌমার থেকে পাওয়া অসম্মান আর অত্যাচারের কথা। খেতে দিত না ছেলে-বৌমা। প্রায়ই আশ্রমে খেতে যেতেন দম্পতি। মুকুন্দপুরের আত্মহত্যার এই ঘটনায় নচিকেতার বৃদ্ধাশ্রম গানের কিঞ্চিৎ ছায়া রয়েছে। সন্তানদের ছোট থেকে বড় করার পর বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা যখন বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েন তখন কি আর এমন চাহিদা থাকে তাঁদের। আশ্রয়,নিরাপত্তা, যত্ন এটুকুই। কিন্তু তার বদলে যদি প্রতিনিয়ত চলে অবহেলা, নির্যাতন, অপমান তাহলে কি করবেন তাঁরা? মুকুন্দপুরের এই ঘটনা নতুন করে উদাহরণ তৈরি করেছে। যত্ন তো দূরের কথা মানুষের প্রাথমিক চাহিদা খাবারটুকু জুটত না এই দম্পতির। ধার নেওয়া টাকাও আটকে রেখেছিল ছেলে। এমনকি মাঝে-মধ্যে মারধরও করা হত। আর সহ্য করতে না পেরে অবশেষে আত্মহননের পথ বেছে নেন মুকুন্দপুরের এই বৃদ্ধ দম্পতি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সেই তথ্যই নিশ্চিত হয়েছে। গলায় ফাঁস থেকেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। দু’জনের ঘাড়েই তীর্যক ফাঁসের চিহ্ন রয়েছে।

    মঙ্গলবার রাতে মুকুন্দপুরের ফ্ল্যাটের পৃথক ঘর থেকে দুলাল পাল এবং রেখা পালের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। প্রথম থেকেই দম্পতির মেয়ের অভিযোগের তীর সরাসরি দাদা এবং বৌদির দিকে ছিল। সুইসাইড নোটেও ছেলে সৌরভ এবং বৌমা কল্যাণীর অত্যাচারের কথাই লেখা আছে। প্রতিবেশীরাও এই বিষয় সহমত জানান। তাঁদের বক্তব্য ঘটনার দিনও দুই পক্ষের মধ্যে চরম অশান্তি হয়েছিল। হয়তো সহ্যের বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় শেষে এই চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এই দম্পতি। মৃত দম্পতির বিবাহিত মেয়ে সঙ্গীতা সেনাপতি হাওড়ার বালির বাসিন্দা। তিনি অভিযোগ জানিয়েছেন, প্রায়ই বাবা-মাকে মারধর করত গুণধর ভাই। এই ভাই এবং তাঁর বৌ তাঁদের বাবা-মাকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দিয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে কন্যা সঙ্গীতা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এর উপর ভিত্তি করেই পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। ছেলে ও বৌমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়াও, অন্যান্য আত্মীয় ও প্রতিবেশীদেরও জিজ্ঞসাবাদ করছে পুলিশ।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)