সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে হারিয়েছেন চাকরি, তবু মানে না মন, ক্লাস নিতে কলকাতা থেকে হুগলিতে হাজির শিক্ষক...
আজকাল | ০৫ এপ্রিল ২০২৫
মিল্টন সেন, হুগলি: নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছিলেন। আদালতের নির্দেশে হটাৎ চাকরিহারা হয়েছেন ঠিকই। তবে তিনি নিশ্চিত, আবারও পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পাবেন। কিন্তু তিনি চিন্তিত পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়ে। তাদের মাঝরাস্তায় হটাৎ ছেড়ে দিলে চলবে কি করে। তাই থেমে থাকেননি। সরকারি শিক্ষকের তকমা হয়তো নেই। তবু অন্যান্য দিনের মতোই বৃহস্পতিবারও ঠিক সময় মতোই কলকাতার সল্টলেক থেকে পৌঁছেছেন হুগলির রিষড়ায় স্কুলে। ক্লাস নিয়েছেন আর পাঁচটা দিনের মতোই।
চাকরি অনিশ্চিত হয়েছে। এখন তিনি আর সরকারি শিক্ষক নন। তবু ছাত্র পড়ানোর লক্ষে এদিনও নিজের পকেটের টাকা খরচ করে স্কুলে হাজির হয়েছেন ইংরেজি শিক্ষক দেবদত্ত বৈদ্য। এর আগে প্রতিদিন তিনি স্কুলে এসেছেন সরকারি শিক্ষক হিসাবে। তবে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর থেকে তিনি আর সরকারি শিক্ষক নন। তবে জীবনে তাঁর অনেক স্বপ্ন। তাই সরকারিভাবে শিক্ষকতা থেকে তাঁর নাম মুছে গেলেও ব্যক্তিগতভাবে তিনি শিক্ষক সেটাই প্রমাণ করেছেন। প্রমাণ করেছেন তিনি পড়ুয়াদের কথা ভাবেন। পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা ভাবেন। সরকারি স্বীকৃতি থাকুক না থাকুক, তিনি শিক্ষক। তাই ছাত্র পড়ানোর পরম তৃপ্তি থেকে তিনি নিজেকে বঞ্চিত করতে পারেননি। সল্টলেক থেকে সোজা হাজির হয়েছেন স্কুলে। এই প্রসঙ্গে স্কুলের দেবদত্ত জানিয়েছেন, তিনি নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছিলেন। আদালতের নির্দেশে তিনি চাকরিহারা হয়েছেন। তবে তিনি চিন্তিত স্কুলের পড়ুয়াদের কথা ভেবে। সিলেবাস অসম্পূর্ণ। তিনি স্কুলে না এলে কে পড়াবে। তাই স্কুলের বাচ্চাদের কথা ভেবে এদিন তিনি অন্যান্য দিনের মতোই স্কুলে এসেছেন। আগামী দিনেও আসবেন।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে স্কুলের অধিকাংশ শিক্ষকের চাকরি অনিশ্চিত হয়েছে। ফলে স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে কার্যত কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে রিষড়া বিদ্যাপীঠ ইউনিট-টু স্কুল। কারণ, কর্মরত ১৭ জন শিক্ষকের পরিবর্তে ৫ জনকে নিয়ে স্কুল চালাতে হচ্ছে। এক মুহূর্তে ১২ জন শিক্ষক অনিশ্চিত হয়ে গেছেন। কীভাবে চলবে স্কুলের ক্লাস? কীভাবে পরীক্ষা নেওয়া হবে? কেমন করে সামাল দেওয়া হবে, ভেবেও কুলকিনারা করতে পারছেন না স্কুলের প্রধান শিক্ষক। সব মিলিয়ে নাজেহাল অবস্থা স্কুল কতৃপক্ষের।