সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: শান্তিপুরের কন্দখোলায় পেট্রল পাম্প থেকে তেল ভরিয়ে টাকা না দিয়ে পালানোর চেষ্টা হয়েছিল। সেসময় পেট্রল পাম্পের এক কর্মীকে পিষে দেওয়ার ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছিল তিনজন। সেই মামলার সাজা ঘোষণা হল আজ শুক্রবার। দোষীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল রানাঘাট ফাস্ট ট্রাক আদালত। ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় অ্যাক্টে রাজ্যে প্রথম খুনের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হল বলে খবর।
সূত্রের খবর, গত বছর সেপ্টেম্বর মাসের ৮ তারিখে গভীর রাতে রানাঘাট থেকে কৃষ্ণনগরগামী একটি মাছ বোঝাই বোলেরো পিকআপ গাড়ি শান্তিপুর থানার কন্দখোলা পেট্রল পাম্পে তেল নিতে ঢুকেছিল। অভিযোগ, তেল ভরার পর টাকা না দিয়েই পালানোর চেষ্টা করে তারা। ওই গাড়িকে যেতে বাঁধা দেন পাম্পের কর্মী বিশ্বজিৎ দাস। অভিযোগ, পাম্পের ওই কর্মী আটকাতে গেলে তাঁকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায় গাড়িটি। পরে মারা যান ওই ব্যক্তি।
ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পেট্রোল পাম্পের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে ওই গাড়িটিকে চিহ্নিত করা হয়। ঘটনার তিনদিনের মধ্যেই ঘাতক গাড়ির সন্ধান পায় পুলিশ। চালক-সহ চারজনকে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। রানাঘাট ফাস্ট ট্রাক কোর্টের বিচারক মনোদীপ দাশগুপ্তের এজলাসে ওই মামলার শুনানি শুরু হয়। খুন, প্রমাণ লোপাট-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়। মাত্র সাতমাসের মধ্যেই ওই মামলার শুনানি শেষ হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার তিন অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। আজ তাঁদের সাজা ঘোষণা করা হয়। যাবজ্জীবন কারাবাসের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে সরকারি পক্ষের আইনজীবী বিভাষ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মূলত এরা এতটাই নির্দয় ছিল সামান্য কিছু টাকার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবেই পেট্রোল পাম্পের ওই কর্মীকে গাড়িতে পিষে চলে যায়। আদালতের কাছে প্রার্থনা ছিল, তারা বেরিয়ে আসলে সমাজমাধ্যমে ভুল বার্তা যাবে। সেই কারণেই মহামান্য আদালত এই ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে।” রানাঘাট পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার কুমার সানিরাজ বলেন, “আমাদের কাছে চ্যালেঞ্জ ছিল অভিযুক্তদের যত দ্রুত সম্ভব গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসা। আমাদের পুলিশ টিম খুব দ্রুততার সঙ্গে কাজ করে সেটা করতে সক্ষম হয়েছে।” মৃত বিশ্বজিৎ দাসের পিতা দুলাল দাস বলেন, “আমরা আদালতের এই রায়দানে খুশি।”