পশ্চিম মেদিনীপুরের ভদ্রকালী গান্ধী উচ্চ বিদ্যাপীঠে অঙ্কের শিক্ষক। বুধবার পর্যন্ত মন দিয়ে ক্লাস নিতেন পড়ুয়াদের। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের রায় শোনার পর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। চুপ করে বসে থাকতে পারেননি। শুক্রবার সকালেই জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন গণিতে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত শিক্ষক অভিজিৎ গিরি।
শুক্রবার দুপুরে অভিজিৎ-সহ পশ্চিম মেদিনীপুরের শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা মানববন্ধন ও পথ অবরোধ করেন। সেখান থেকেই শিক্ষক-শিক্ষিকিকাদের হুঁশিয়ারি, ‘এখানেই আমাদের জীবন্ত জ্বালিয়ে দিন! না হলে স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি দিন।’ আবেগপ্রবণ হয়ে সকলের দাবি একটাই, ‘চাকরিটা ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’
সুপ্রিম রায় শোনার পর কিছুটা ভেঙে পড়েছিলেন অভিজিৎ। পরের দিন নিজেকে কিছুটা সামলে শপথ নিয়েছেন লড়াই করার। বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান, বৃদ্ধ বাবা রয়েছেন। সকলেই তাঁর উপর নির্বরশীল। ‘যোগ্য’ হয়েও চাকরিটা হারাতে হয়েছে, তাই নিজের অধিকার ফিরিয়ে আনার শপথ নিয়েছেন তিনি। অভিজিৎ বলেন, ‘এই মেদিনীপুরের মাটি ছুঁয়ে আমিও প্রতিজ্ঞা করে যাচ্ছি, মরতে যদি আমাকে হয়, এই পশ্চিমবঙ্গকে জঞ্জালমুক্ত করে দিয়েই মরব! সমাজকে সুস্থ করে তবেই মরব। বিপ্লব কাকে বলে, এই মেদিনীপুর আবার একবার দেখিয়ে দেবে।’
গোটা বিষয়টিতে ‘রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার’ হয়েছেন বলেও দাবি করেছেন অভিজিৎ গিরি, কৃষ্ণগোপাল চক্রবর্তী-সহ শিক্ষক-শিক্ষিকারা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে অভিজিত বলেন, ‘বিরোধীরা কে কী করল, এখন আর সেই সব না ভেবে, আপনি আমাদের এই বিপদ থেকে উদ্ধার করুন। কী ভাবে সুপ্রিম কোর্টে পুনরায় আবেদন করে আইনের পথেই আমাদের চাকরিতে ফেরানো যায়, আপনি দয়া করে সেই উদ্যোগ নিন।’ চাকরি কি ফিরবে? সকলের কাছে বড় প্রশ্ন এখন সেটাই।