শিলিগুড়িতে ঘেরা জমি থেকে উদ্ধার হ্যান্ড গ্রেনেড, নিষ্ক্রিয় করল সেনা
বর্তমান | ০৫ এপ্রিল ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: ফোনে হদিশ গ্রেনেডের! বৃহস্পতিবার রাতে শিলিগুড়ি শহর সংলগ্ন পবিত্রনগরে একটি ঘেরা জমিতে সেটি দেখতে পায় পুলিস। তারা রাতভর এলাকা ঘিরে রাখে। শুক্রবার সেটি উদ্ধার করে নিষ্ক্রিয় করে সেনা বাহিনী। পুলিস ও সেনা বাহিনী সূত্রে খবর, হ্যান্ড গ্রেনেডটি সেনা বাহিনীর। দেড় বছর আগে সিকিম হ্রদ বিস্ফোরণের জেরে সেটি নদীপথে ভেসে আসে বলে পুলিসের অনুমান। কিন্তু ঘেরা ও জঙ্গলে ঢাকা জমি থেকে সেটি উদ্ধার করা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে। এনিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিস।
শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিস কমিশনার (পশ্চিম) বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, সেনা বাহিনী ওই গ্রেনেড নিষ্ক্রিয় করেছে। সিকিমের হ্রদ বিপর্যয়ের সময় সেটি নদী পথে এসেছে বলে মনে হচ্ছে। তবে ঘেরা জমিতে ওই গ্রেনেড কে বা কারা রেখেছে, তা জানা যায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
শিলিগুড়ি শহরের ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড ও মাটিগাড়া ব্লকের চম্পাসারি গ্রাম পঞ্চায়েতের সীমানায় পবিত্রনগর। অধিকাংশ জমি ঘেরা দেওয়া। হাতেগোনা কিছু বাড়ি তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকা থেকে কিছুটা দূরে মহিষমারি নদী। সেখানকারই একটি ঘেরা জমি থেকে হ্যান্ড গ্রেনেড উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
সংশ্লিষ্ট এলাকা প্রধাননগর থানার অধীনে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই জমিতে বোমার মতো বস্তু পড়ে আছে বলে বৃহস্পতিবার রাতে থানায় ফোন আসে। সেই ফোন কল পেয়েই অপারেশনে নামে পুলিস। তারা সেখানে গিয়ে মরচে ধরা হ্যান্ড গ্রেনেড দেখে চমকে ওঠেন। সেটি নিষ্ক্রিয় করার মতো ব্যবস্থা পুলিস কিংবা সিআইডির বম্ব স্কোয়াডের কাছে নেই। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে ব্যাঙডুবি সেনা ছাউনিতে খবর দেয় পুলিস। সবকিছু শোনার পর সেনা বাহিনী রাতে সেটি উদ্ধারের ঝুঁকি নেয়নি। এই অবস্থায় রাতভর এলাকা ঘিরে রাখে পুলিস।
শুক্রবার ঘটনাটি জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। কৌতূহলী বাসিন্দারা সেখানে ভিড় করেন। তাঁদের কোনওরকমে সামাল দেয় পুলিস। দুপুরে বম্ব স্কোয়াডের সরঞ্জাম নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সেনার একটি দল। যার নেতৃত্বে এক মহিলা অফিসার ছিলেন। এরপর স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের সহযোগিতায় পুলিস ঘেরা দেওয়া সেই জমির গেটের তালা ভাঙে। গ্রেনেডটি উদ্ধার করেন সেনা বাহিনীর মহিলা অফিসার। তিনি সেটিকে বালি ভর্তি একটি বক্সে রাখেন। ওই সেনা অফিসার জানান, এটি বেশকয়েক বছরের পুরনো। মাটির নীচে থাকায় মরচে ধরেছে। পরে সেটি নিয়ে যাওয়া হয়।
নদীর জলে সংশ্লিষ্ট হ্যান্ড গ্রেনেড ভেসে আসলেও সেটি জঙ্গলে ঢাকা ঘেরা জমিতে গেল কীভাবে? স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করতেই ওই জমিতে শক্তিশালী গ্রেনেড রেখেছিল। ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তথা পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স বিভাগের মেয়র পরিষদ সদস্য দিলীপ বর্মন বলেন, ওই জমিতে গ্রেনেডটি কে, কী উদ্দেশ্যে রেখেছে বুঝতে পারছি না। চম্পাসারি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান জনক সাহা বলেন, নদী থেকে বালি ও পাথর তুলতে গিয়ে সেটি কেউ পেয়েছে বলে শুনেছি। দু’জনেরই দাবি, ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত পুলিসের। নিজস্ব চিত্র