নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: ২০১৬ সালে একইসঙ্গে চাকরি পেয়েছিলেন দম্পতি। সুপ্রিম রায়ে বাতিল হয়েছে প্রায় ২৬ হাজারের চাকরি। তার জেরে একসঙ্গে চাকরি খুইয়ে আতান্তরে পড়েছেন দম্পতি। সন্তানসহ মা-বাবাকে নিয়ে ভরা সংসার এখন কীভাবে চলবে, ভেবে পাচ্ছেন না নওপাড়া জুনিয়র হাইস্কুলের ইংরেজির শিক্ষক হাবিবুল্লা শেখ। চাকরি হারিয়ে নিজের পাশাপশি স্ত্রীকেও মানসিকভাবে সামাল দিচ্ছেন তিনি। এখন ভবিষ্যৎ কী হবে, ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছেন না ওই দম্পতি। তবে নিজেরা চাকরি হারালেও দুঃখ চেপে রেখে বাকিদের সাহস দিচ্ছেন তাঁরা। এই অবস্থায় অপর শিক্ষক-শিক্ষিকাদের শান্ত থাকার জন্য কাউন্সেলিং করছেন হাবিবুল্লা।
তিনি বলেন, বাড়িতে পরিবার আছে। এখন কী করব জানি না। দিল্লিতে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। আমরা সকলেই খুব উদ্বিগ্ন। ২০১৬ সালের প্যানেলে আমার স্ত্রীও শক্তিপুর কেএনসি গার্লস হাইস্কুলে যোগদান করে। আমার সঙ্গে আমার স্ত্রীরও চাকরি চলে গিয়েছে। সংসার চালানো এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বহরমপুরের বাসিন্দা হাবিবুল্লা। সংগঠনের তরফে নিজেই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন। চাকরি হারানো সহ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সান্ত্বনা দিতে বারবার তিনি সবাইকে বলছেন, অবশ্যই এটা আমাদের জন্য খুব কঠিন সময়। এই সময় শান্ত থাকতে হবে। কেউ যেন কোনও ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে না নেয়। আমরা সকলেই একসঙ্গে আছি। সবাই একসঙ্গে লড়ব। এই জেলায় শিক্ষক-অশিক্ষক মিলিয়ে প্রায় চার হাজার জন চাকরি হারিয়েছেন।য হাবিবুল্লার এই কথায় অনেকেই জোর পাচ্ছেন। কারণ, স্ত্রীর সঙ্গে তাঁরও চাকরি চলে গিয়েছে। এই অবস্থায় তিনি নিজেও ভেঙে পড়েননি। বাকিদেরও ভেঙে পড়তে বারণ করছেন। চাকরি হারানোর পরও তাঁর এই মানসিকতা অন্যদের শিক্ষা দিচ্ছে।এক শিক্ষক বলেন, হাবিবুল্লার মধ্যে অফুরন্ত প্রাণশক্তি রয়েছে। উনি নিজে ভেঙে পড়লেও কাউকে বুঝতে দিচ্ছেন না। আমাদের পাশে থেকে আগামীর পরিকল্পনা করছেন। আইন মেনে আর কীভাবে লড়াই করা যাবে, তা উনি আলোচনা করছেন। ওঁর উপর আমাদের ভরসা আছে। -নিজস্ব চিত্র