• পেট্রল পাম্প-কর্মীকে গাড়িতে পিষে খুন: তিনজনের যাবজ্জীবন
    বর্তমান | ০৫ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: শান্তিপুরের পেট্রল পাম্পের কর্মীকে গাড়িতে পিষে খুনের ঘটনায় তিনজনকে দোষী সাব্যস্ত করল রানাঘাট মহকুমা আদালত। বৃহস্পতিবার সমস্ত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়। শুক্রবার তিনজনের আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা ঘোষণা করেন বিচারক। ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে মাত্র হাতেগোনা কয়েক মাসের মধ্যেই শেষ হল বিচার প্রক্রিয়া। ঘটনাটি ঘটে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে। ঘটনাস্থল নদীয়ার শান্তিপুর থানা এলাকার কন্দখোলার একটি পেট্রল পাম্প। একটি মাছবোঝাই পিকআপ ভ্যানে ওই তিনজন এসে প্রথমে তেল ভরে। তারপর টাকা না দিয়েই রানাঘাট থেকে কৃষ্ণনগরের দিকে পালানোর চেষ্টা করে। সেই সময় বিশ্বজিৎ দাস নামে ওই পেট্রল পাম্পের এক কর্মী তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁকে গাড়িতে পিষে দিয়েই ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় তিন অপরাধী। রক্তাক্ত অবস্থায় নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিশ্বজিৎবাবুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপর তড়িঘড়ি সেই ঘটনার তদন্তে নামে শান্তিপুর থানার পুলিস। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করা হয় ঘাতক গাড়িটিকে। পরবর্তীতে তদন্তে খোঁজ মেলে অভিযুক্তরা গা ঢাকা দিয়েছে বসিরহাটে। শান্তিপুর থানার একটি বিশেষ দল সেখানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে মোট চারজনকে। ধৃতদের মধ্যে একজন নাবালক ছিল। বৃহস্পতিবার এই মামলাতেই তিন অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেন রানাঘাট মহকুমা আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক মনোদীপ দাশগুপ্ত। অপরাধীদের বিরুদ্ধে ১০৩(১), ৩(৫) সহ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছিল। মাত্র কয়েক মাস চলে বিচার প্রক্রিয়া। এই সময়ের মধ্যেই তথ্য প্রমাণ সহ অপরাধীদের অপরাধ আদালতে তুলে ধরতে সক্ষম হয় রানাঘাট জেলা পুলিস। তার ভিত্তিতেই শুক্রবার সাজা ঘোষণা করে আদালত। গাড়িতে পিষে খুনের ঘটনায় তিনজন, আলামিন ওস্তাগার(২১), সুমন মোল্লা ওরফে আজাদ(২৪) ও মহম্মদ আলম গাজী(৫৭)কে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারা প্রত্যেকেই উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ থানা এলাকার বাসিন্দা।

    সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, অভিযুক্ত নাবালকের জুভেনাইল আদালতে বিচার চলছে। অত্যন্ত ভালো তদন্ত এগিয়েছে। পুলিস ৯০দিনের মধ্যেই চার্জশিট জমা করে দিয়েছিল। এই রায় বিরলতম। রানাঘাট জেলা পুলিসের সুপার কুমার সানি রাজ বলেন, আমাদের পুরো টিম খুব ভালো কাজ করেছে। অল্প সময়ের মধ্যেই অপরাধীদের গ্রেপ্তার, চার্জশিট ফাইল করার মতো কাজগুলি সম্পন্ন করা গিয়েছে। আমরা শুধুমাত্র অপরাধের তদন্ত করাই নয়, তার ন্যায় বিচার পাইয়ে দেওয়া অবধি তৎপর থাকছি। আমাদের পুলিস জেলার কাছে এটি আরও একটি সাফল্য।
  • Link to this news (বর্তমান)