• কারচুপি করে বিল্ডিং নির্মাণে বাড়তি ছাড়, অভিযোগ পেয়েই পদক্ষেপ ফিরহাদের
    বর্তমান | ০৫ এপ্রিল ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মাত্র এক কাঠা পনেরো ছটাক জমি। তাতেই পাঁচতলা বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল। অভিযোগ পেয়ে মেয়রের তৎপরতায় নির্মাণের আগেই বাতিল হল নকশা। অভিযোগ, জমি-বাড়ির ইনসপেকশন বুক বা আইবি কপির নথি জাল করে বাড়িতে ভাড়াটিয়া দেখিয়ে পুরসভা থেকে বিল্ডিং প্ল্যানে অতিরিক্ত ফ্লোর এরিয়া রেশিও নিয়ে পাঁচতলা নির্মাণের চেষ্টা করা হয়েছিল। জালিয়াতি করায় অভিযুক্তের খোঁজে ভিজিল্যান্স বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। অভিযোগের চার মাসের মাথায় মিলল প্রতিকার, জানাচ্ছেন অভিযোগকারী।

    শিয়ালদহ চত্বরে তস্য গলি মহেন্দ্র সরকার স্ট্রিট। সেখানে ৫২এ, ঠিকানায় ছিল একতলা জীর্ণ বাড়ি। গত বছর সেই বাড়ির শরিকরা জায়গাটি ডেভেলপ করতে দেয় প্রোমোটারকে। সেখানে নির্মাণ হতে দেখে খোঁজ নেন প্রতিবেশী সায়ন্তক দাস। খোঁজ নিতেই তাঁর চক্ষু চড়কগাছ। বাড়িতে থাকতেন শরিকরা। কিন্তু, আইবি কপিতে দেখা যাচ্ছে, সেখানে নাকি ভাড়াটিয়াও থাকেন। ওই নথি সম্পূর্ণ জাল। শুধু তাই নয়, সেই নথি দেখিয়ে ওই জমিতে পাঁচতলা বাড়ি নির্মাণের অনুমোদন জোগাড় করা হয়েছিল। এই সব জানার পর পেশায় আইনজীবী সায়ন্তক দাস আরটিআই করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। 

    অভিযোগ জানান মেয়র ফিরহাদ হাকিমকেও। সেই অভিযোগ পেয়েই অভিযোগকারীকে ডেকে পাঠান মেয়র। এরপর বিল্ডিং ও সম্পত্তি কর মূল্যায়ন ও রাজস্ব আদায় বিভাগের কাছে সমস্ত নথি চেয়ে পাঠান। নথি হাতে আসতেই ধরা পরে জালিয়াতি। সরকারি আইবি কপি জাল করে সেখানে ভাড়াটিয়া দেখানো হয়েছে। সরকারের সার্ভারে থাকা আসল আইবি কপিতে যা নেই। সঙ্গে সঙ্গে মেয়র অনুমোদিত নকশা বাতিলের নির্দেশ দেন। 

    এখানেই প্রশ্ন উঠেছে, আইবি কপি খতিয়ে না দেখে কেন বিল্ডিং বিভাগ নকশার অনুমোদন দিয়েছে? প্রোমোটারের জমা দেওয়া নথি কেন সরকারি সার্ভারে থাকা নথির সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হল না? এসব দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মেয়র। ফিরহাদ বলেন, নথি কে জাল করল? এই ঘটনায় কোন কোন কর্মী ওআধিকারিক যুক্ত, তার খোঁজে ভিজিল্যান্স বসানোর নির্দেশ দিয়েছি। সরকারি নথি জাল করার জন্য ক্রিমিনাল কেস করা হয়েছে। আমরা এখন সব তথ্যই ওয়েবসাইটে দিচ্ছি। বহু বছরের রোগ। আগে এমন হতো। সেই ছবি বদল করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।

    অভিযোগকারী সায়ন্তক দাস বলেন, তিনি নিউ মার্কেট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। মেয়রের কাছেও অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি হাইকোর্টে মামলা করেছেন। এই বাড়ির নকশা গত বছরের অক্টোবরে মাসে অনুমোদন করা হয়। তার চার মাসের মাথায় তা বাতিল করল পুরসভা।
  • Link to this news (বর্তমান)